জল্পনাই সত্যি হল। তৃণমূলে যোগ দিলের আরও এক বিজেপি বিধায়ক।দক্ষিণ কলকাতার এক হোটেলে এ দিন জোড়া-ফুল পতাকা হাতে তুলে নেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবংতৃণমূলে হিন্দিভাষী সেলের সভাপতি তথা জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্ত কৃষ্ণ কল্যাণীর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন।
বিধানসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। পদ্ম প্রতীকে রায়গঞ্জে ভোটে লড়াইয়ের টিকিট পেয়েছিলেন। পরে জয় পেয়ে বিধায়ক হন এই তৃণমূল ত্যাগী। এরপরই কৃষ্ণের মোহভঙ্গ শুরু হয়। রায়গঞ্জের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধী শুরু হয় তাঁর। যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। দল বিরোধী নানা মন্তব্য করেন তিনি। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে কৃষ্ণকে শোকজ করেছিল বিজেপি। শোকজের সিদ্ধান্ত জানার পরেই দলত্যাগের কথা ঘোষণাও করেন বিধায়ক।
শেষ পর্যন্ত, 'ঘরওয়াপসি'-ই হল রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়কের। তৃণমূলে যোগ দিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী।
বিজেপিতে যোগদানকে '৬ মাসের ভুল' বলে উল্লেখ করেছেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। কেন তাঁর বিজেপি ত্যাগ? জবাবে বিধায়ক বলেছেন, 'বিজেপিতে ভালো কাজের মূল্যায়ণ হয় না। ভালো কাজের পরিবেশ নেই। হয় শুধু ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। উল্টোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালো কাজে আমি আমি অনুপ্রণিত। স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপোশ্রীর মতো ভালো প্রকল্পের তুলনা হয় না। তাই ভোলে কাজ করার জন্যই তৃণমূলে যোগ দিলাম।'
আরও পড়ুন- বিজেপি ছাড়লেন বাবু মাস্টার, বললেন ‘জীবদ্দশায় আর এই দল করব না’
তৃণমূলে ফিরেই সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিধায়ক কৃষ্ণ। দেবশ্রী চৌধুরী সম্পর্কে তিনি বলেন, 'ওনাকে তিন বছরে এলাকায় দেখা যায়নি। তাও পুরস্কৃত হয়েছেন। আর আমাকে ভোটে হারাতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।' শুভেন্দু অধিকারী সমন্ধে বলেন, '১ বছরও হয়নি উনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বলছেন বিজেপি সনাতন ধর্মের পক্ষে কাজ করছে। তার আগে তৃণমূলের হয়ে বিজেপির ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রস্ন তুলতেন। তাই ওনার কাছ থেকে আমি সনাতন ধর্ম শিখবো না।'
কৃষ্ণ কল্যাণীর তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'উনি ব্যবসায়ী মানুষ। এ রাজ্যে ব্যবসা করতে গেলে কী কী করতে হয় উনি ভালো করে জানেন। তাই তৃণমূলে ফিরে গেলেন। কৃষ্ণ কল্যাণী দাবি করেছেন মমতাদেবীর কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে ফিরেছেন। জানতে চাই হঠাৎ বিগত ৬ মাসে কী এমন ভালো কাজে উনি অনুপ্রণিত হলেন?'
এর আগে বিজেপির চার বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এঁরা হলেন, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়, বড়জোড়ার বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়।
বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রতীকে জয়ী হন ৭৭ জন প্রার্থী। পরে, সাংসদ পদ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার পদত্যাগ করেন। ফলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৫-এ হয়। এরপর মুকুল রায় সহ ৫ বিধায়কের বিজেপি ত্যাগের ফলে দলের বিধায়ক সংখ্যা কমে হল ৭০।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন