রেলের গড়িমসিতেই এখনও মাঝেরহাট সেতু চালু করা যায়নি। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এই অভিযোগ ওড়াল পূর্ব রেল। সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ত দফতরের বেশ কিছু অনুমতির অপেক্ষায় মাঝেরহাট সেতুর কাজ থমকে রয়েছে বলে দাবি রেলের। এদিকে সেতু বিতর্কে রেলের দাবিকে তুলে ধরে মমতা সরকারকে বিঁধছেন বিজেপির তরফে এ রাজ্যের সহকারী পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য।
পূর্ব রেলর তরফে টুইটবার্তায় জানানো হয়েছে, 'সেতু চালু করার জন্য সব ধরণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন। রেলের পক্ষ থেকে ছাড়পত্রের জন্য পূর্ত দফতরের তরফে বাধ্যতামূলক সুরক্ষা শংসাপত্রের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। আশা করা যায় আগামী কয়েকদিনেই তা এসে যাবে। রেলের কাছে অন্য কোনও ইস্যু আটকে নেই।'
মাঝেরহাট সেতু দ্রুত চালু করার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিজেপির বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তুলকালাম পরিস্থিতি হয়। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিতে তারাতলা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপির অভিযোগ তাদের মিছিল শুরুর আগেই জমায়েত হওয়া বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এমনকী বিজেপি কর্মীদের ওপর লাঠিও চালানো হয়েছে।
এরপরই নবান্নে বিজেপির বিক্ষোভকে পালটা আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ৯ মাস ধরে অনুমতি দেয়নি রেল। এখনো অনুমতি দিতে ‘ডিলেমি’ করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ন’মাস যখন রেল পারমিশন দেয়নি তখন বিজেপি পার্টি তুমি কি ঘুমাচ্ছিলেন, না নাক ডেকে হুকো টানছিলে? ন’মাস মিটিং করে করে পায়ে ধরেছি শুধু। যে ক্লিয়ারেন্স দাও। গঙ্গাসাগরের মেলায় আমাদের লোকেরা কত কষ্ট করেছে। আজ এই ২-৩ বছর ধরে বেহালার মানুষ কত কষ্ট করেছে। ন’মাস আগে এটা হয়ে যেতে পারত। শুধুমাত্র রেল আমাদের সঠিক সময় পারমিশন দেয়নি তাই ফেস করতে হয়েছে।'
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতার দাবি, 'এখনো ওটা (মাঝেরহাট সেতু)পুরো কমপ্লিট হয়নি। দেখতে কমপ্লিট লাগছে। পিজব্লুডি-র কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু রেলের ১০০ শতাংশ পারমিশন এখনো পাওয়া যায়নি। সেটা দিতে ৭ – ৮ দিন সময় লাগবে। এটা আমাদের ওপরে নয়, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ডিলেমির জন্য। বিজেপির পলিটিক্সের জন্য মানুষ হ্যারাস হচ্ছে।'
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগ নস্যাৎ করে কার্যত পূর্ত দফতরের দিকেই দায় ঠেলেছে পূর্ব রেল। আর সেই দাবি তুলে ধরে রাজ্যের বিরুদ্ধে এবার সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। মমতা সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি টুইটে লিখেছেন, 'মাঝেরহাট ব্রিজ না খোলা নিয়ে পিসির বাহানাকে নস্যাৎ করেছে পূর্ব রেলওয়ে। সিভিল ওয়ার্ক ছাড়া মমতার সরকার ব্রিজ তৈরির সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক সুরক্ষা শংসাপত্র এখনও দিতে পারেনি। নির্বাচনের আগে ব্রিজ উদ্বোধনের জন্য এই অযথা দেরি বলে মনে হচ্ছে। চরম অসুবিধায় পড়ছেন জনগণ।'
ভোট এগোতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। শাসক-বিরোধী তরজায় নয়া ইস্যু মাঝেরহাট সেতু।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন