মরু ঝড় সামলে রাজস্থানে গদি আগলে রাখতে পারবে কি কংগ্রেস? যত সময় গড়াচ্ছে, রাজস্থানে রাজনৈতিক সংকট ততই ঘনীভূত হচ্ছে। এই আবহে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ফের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকল কংগ্রেস। আগামিকালের বৈঠকে শচীন পাইলট ও সমস্ত বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এদিনের বৈঠকে পাইলটের গরহাজির থাকা নিয়ে জল্পনা বেড়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। তাঁর শিবির থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় অন্তত ৩০ জন বিধায়ক শচীন পাইলটের সমর্থনে রয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের স্মৃতি উস্কে গেহলট সরকার পতনের আশঙ্কা তীব্র হয়। কিন্তু, বেলা বাড়তেই ধীরে ধীরে অন্য ছবি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কংগ্রেসের ১০৭ জন বিধায়কের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জনই পরিষদীয় দলের বৈঠকে উপস্থিত হন বলে দাবি করেন দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। শচীন পাইলটকেও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সামাধানের বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু পরিষদীয় দলের বৈঠক এড়ান তিনি। কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, শচীন পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। পাইলটের জন্য় দলের দরজা খোলা আছে।
বিরোধী শিবিরে চিড় ধরিয়ে ক্ষমতা দখলের প্রয়াস চালাচ্ছে বিজেপি। এর বিরুদ্ধে পরিষদীয় দলের বৈঠকে এদিন সংকল্প গ্রহণ করে কংগ্রেস। এই ধরনের পদক্ষেপ রাজ্যের আট কোটি ভোটারের জনমতকে অবজ্ঞা করা বলে মনে করছে হাত শিবির। দল বিরোধী কাজের সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির উঠেছে বৈঠকে। বিজেপি যাতে বিধায়ক কেনাবেচার সুযোগ না পায় তাই আপাতত দলীয় বিধায়কদের হোটেলবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস।
Rajasthan Congress CLP passes resolution saying that "cheer-haran (stripping) of democracy by BJP is an insult to the mandate of 8 crore citizens of Rajasthan"@IndianExpress#Rajasthan #RajasthanPoliticalCrisis #Sachin_pilot #AshokGehlot pic.twitter.com/Rr8OVbWAde
— Hamza Khan (@Hamzwa) July 13, 2020
বিজেপিকে নিশানা করে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র কেড়ে বিজেপি ৮ কোটি ভোটারের রায়কে অপমান করছে।
এদিন পরিষদীয় বৈঠকে না থাকলেও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাইলট আগেই জানিয়েছেন যে, তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না। এ প্রসঙ্গে রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না।'
গত শনিবার থেকে শচীন পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে দাবি করছিলেন রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্ব। তার মধ্যেই রবিবারই দিল্লিতে পৌঁছে যান পাইলট। তবে, এদিন শচীনের সঙ্গে যোগাযোগের কথা সাংবাদিক বৈঠকে স্বীকার করে নেন রণদীপ সুরজেওয়ালা। তাঁর কথায়, 'গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজস্থানের পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব শচীন পাইলটের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন।' অসন্তুষ্ট পাইলটের প্রতি তাঁর বার্তা, 'পরিবার থেকে চলে গিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এই পদক্ষেপ দল ও ব্যক্তিগতভাবে আঘাতের সমান।'
এখানেই শেষ নয়। এদিন সকালে জয়পুরে কংগ্রেস কার্যলয় থেকে দলের প্রদেশ সভাপতি শচীন পাইলটের ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বেলা বাড়তেই ফের সেই ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১০১ বিধায়কের সমর্থন। গেহলটের বাড়িতে ১০০ বিধায়ক হাজির ছিলেন। এরপরও রয়েছে নির্দল ও সহযোগী দলের বিধায়কদের সমর্থন। ফলে আপাতত গেহলট সরকার বিপন্মুক্ত ধরে নিয়েই ঘুঁটি সাজাচ্ছে হাত শিবির।
Breaking: Ashok Gehlot parades MLAs at his residence@IndianExpress #Sachin_pilot #Rajasthan #RajasthanPolitics #RajasthanPoliticalCrisis #Sachinpilot pic.twitter.com/Keh3fJfMRz
— Hamza Khan (@Hamzwa) July 13, 2020
পাইলট চালে রাজস্থানের গেহলট সরকার নড়বড়ে হতেই সোমবার সকালে আয়কর ফাঁকির অভিযোগে আয়কর বিভাগ অশোক গেহলট ঘনিষ্ঠ রাজীব অরোরা ও ধর্মেন্দ্র রাঠোরের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। রাজীব অরোরা রাজস্থান কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে সুরজেওয়ালা বলেন, ‘আইটি, ইডি ও সিবিআই বিজেপির ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন। অশুভ লক্ষ্য নিয়ে কোনও রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দিলেই এই সংস্থাগুলো সক্রিয় হয়ে ওটে। ওরা কংগ্রেস বিধায়কদের ঘুষ দিতে পারেনি, তাহলে কেন আইটি-কে ডাকছে? আমি এটা বলতে পারি বিকেলের মধ্যে ইডি আসবে, তারপর সিবিআই।’
भाजपा का दूसरा अंग्रिम संगठन भी मैदान में आया
ई.डी भी जयपुर आ ही गई, जैसा कहा था।
अब CBI कब आएगी? https://t.co/KkoBoUvB7B
— Randeep Singh Surjewala (@rssurjewala) July 13, 2020
এদিন কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠকের দলীয় সব বিধায়কদের হাজিরা বাধ্যতামূলক করতে হুইপ জারি করেছিল কংগ্রেস। পাইলটের সমর্থনে ত্রিশ বিধায়কের সমর্থনের দাবি উড়িয়ে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ পাণ্ডে দাবি করেন, '১০৯ বিধায়ক সাক্ষর করে জানিয়েছেন যে তাঁরা অশোক গেহলট সরকারকে সমর্থন করছেন ও সোনিয়া-রাহিলজীর নেতৃত্বে আস্থাশীল। এছাড়াও অন্যান্য বেশ কয়েকজন বিধায়কও ফোনে মুখ্যমন্ত্রী হেগলটের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।' গেহলট শিবিরও ঘরোয়া প্রতিপক্ষ শচীন পাইলটের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্টদের দাবি, নিজে মুখে প্রকাশ্যে যতক্ষণ না শচীন পাইলট কিছু বলছেন ততক্ষণ মনে করব পুরো বিষয়টিই 'রটনা' ও 'ভুয়ো'। সঙ্কটে ক্রমশ গভীরে বুঝেই কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশে রবিবারই অজয় মাকেন ও রণদীপ সুরজেওয়ালা জয়পুরে পৌঁছে যান।
উল্লেখ্য, ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসে ১০৭ বিধায়ক রয়েছেন। এছাড়াও সরকারের সমর্থন করছে দু'জন করে সিপিএম ও ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির বিধায়ক, আরএলডির একজন ও ১২ নির্দল বিধায়ক। বিজেপির দখলে ৭৩ জন বিধায়ক। এনডিএ শরীক আরএলপি ৩ জন বিধায়ক রয়েছে। বাকি এক নির্দল বিধায়কও গেরুয়া শিবিরকে সমর্থন করে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন