শেষ পর্যন্ত 'বিদ্রোহী' শচীন পাইলটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কংগ্রেস। উপমুখ্যমন্ত্রী পদ কেড়ে নেওয়ার সঙ্গেই গেহলট মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হল তরুণ এই নেতাকে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকেও। সোমবার শচীন পাইলটকে অলোচনার মাধ্যমে ঘরোয়া কাজিয়া মিটিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু তার পরও এদিন পরিষদীয় দলের দ্বিতীয় বৈঠকে হাজির হননি তিনি। তারপরই পাইলটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়। 'শচীন পাইলটের মতো কংগ্রেসের অন্য কোনও তরুণ নেতাকে অল্প দিনে এত সুযোগ দেওয়া হয়নি' বলে দাবি করেন রণদীপ সুরজেওয়ালা। পাল্টা শচীন পাইলট বলেছেন, 'সত্যকে পরাস্ত করা যায় না।'
মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে পাইলট ঘনিষ্ট বিশ্বভেন্দ্র সিং, রমেশ মিনাকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হয়েছে গোবিন্দ সিং দোতাসরাকে। মঙ্গলবারই পাইলট-সহ ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব পাশ হয় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে। বৈঠকে ফের রাজস্থানের পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হন গেহলট।
এদিন সাংবাদিকদের কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওলা বলেছেন, 'একাধিকবার পাইলটের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর অসন্তোষের বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু বারংবার শৃঙ্খলাভঙ্গ মেনে নেওয়া যাবে না। অল্প সময়ে দল তাঁকে বড় পদ দিয়ে সম্মানিত করেছে।'
দলের এই সিদ্ধান্তের পর পরই শচীন পাইলট শিবির থেকে বিশ্বভেন্দ্র সিং বিবৃতি দিয়ে জানান, 'পদ নয়, যোগ্য সম্মান দাবি করা হয়েছিল। প্রকাশ্যে পুলিশ দিয়ে হেনস্থা মেনে নেওয়া যাবে না।'
নবীণ-প্রবীন দ্বন্দ্বের চোরাবালিতেই মরু রাজ্যে সংকটে কংগ্রেসের অশোক গেহলট সরকার। তবে, কংগ্রেস দাবি করেছে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক রয়েছেন। ফলে সরকার পতনের কোনও সম্ভাবনা নেই। এগিন পরিষদীয় বৈঠকের পরই রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। পর্যাপ্ত বিধায়কের সমর্থনের কথা তুলে ধরতে পারেন তিনি।
Just In: Chief Minister @ashokgehlot51 meets Rajasthan Governor Kalraj Mishra@IndianExpress#Rajasthan #RajasthanPoliticalCrisis #RajasthanPolitics #GehlotVsPilot pic.twitter.com/phUZ9XioLF
— Hamza Khan (@Hamzwa) July 14, 2020
সূত্রের খবর, শচীনের অসন্তোষ দূর করতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেছিলেন স্বয়ং রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আহমেদ প্যাটেল, পি চিদাম্বরম, কে সি বেণুগোপালরা। কিন্তু, পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনও বদল হয়নি। হুইপ জারি সত্ত্বেও গতকালই পরিষদীয় বৈঠক এড়িয়েছেন পাইলট। আপাতত মানেসারে ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বিধায়ক নিয়ে বিলাসবহুল হোটেলে নিজেকে বন্দি করে রেখেছেন সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী।
এর পর কী তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার মতো সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড? আপাতত জল মেপেই এগোতে চাইছে হাত শিবির।
চোরা বালিতে ফাটল জোড়ার বদলে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে তা স্পষ্ট। ক্ষমতার গন্ধ মিলতেই তাই আজ দলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছে বিজেপি। সূত্রের খবর, হস্তক্ষেপ করতে পারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সোমবার শতাধিক বিধায়ককে জয়পুরে হোটেলবন্দি করে কংগ্রেস। শচীন ঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়েও ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় যা ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে বেশি। যদিও শচীন আগে বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে রয়েছে ৩০ বিধায়ক। আপাতত 'বিদ্রোহী' পালটের পদক্ষেপ দেখেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে আগ্রহী কংগ্রেস হাইকমান্ড।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন