মরুরাজ্যে কংগ্রেস সরকারের প্রতি ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির (বিটিপি) দুই বিধায়কের সমর্থন মিলেছে বলে দাবি করার পরই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। শুক্রবার বিটিপি-র পক্ষ থেকে রাজস্থানের দুই দলীয় বিধায়ককে কোনরকম ভোটদান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। এর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই 'বিপরীত অবস্থান' নিলেন দুই বিধায়ক। শনিবার টুইট করে গেহলট জানালেন, "ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির (বিটিপি) দুই বিধায়ক তাঁদের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে এবং আলোচনার পর সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন"।
भारतीय ट्राइबल पार्टी (बीटीपी) के दोनों विधायकों ने उनकी प्रदेश कार्यकारिणी के पदाधिकारियों के साथ मुलाक़ात कर और अपने मांगपत्र के साथ चर्चा कर सरकार को समर्थन देने की घोषणा की। pic.twitter.com/a2783tQYDo
— Ashok Gehlot (@ashokgehlot51) July 18, 2020
এদিকে, রাজস্থানে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নাক গলানো থেকে বিরোধী দলের নেতাকে সহায়তার অভিযোগে উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এবার শেষ পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপি নেত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরারাজে সিন্ধিয়া। এদিন একটি টুইট করে কংগ্রেসের অন্তর্কলহের নিন্দা করেন বিজেপি নেত্রী। টুইটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'এটা দুর্ভেগ্যের যে করোনার মাঝেও কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জন্য মাসুল গুণতে হচ্ছে রাজস্থানের মানুষকে। কালিমালিপ্ত করে বিজেপির কোনও নেতার নাম টেনে আনা যাবে না। আমাদের কাছে মানুষের স্বার্থই সবসময় আগ্রাধিকার পায়।'
এদিকে, রাজস্থানে কংগ্রেস বিরুদ্ধে ময়দানে নামল বিএসপি। মরু রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানালেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। সরকার গঠন পর্বে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের শরিক দল ছিল বিএসপি। কিন্তু, বিএসপি বিধায়করা পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। এতেই ক্ষুব্ধ মায়াবতী। তিনি জানিয়েছেন, 'মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট প্রকাশ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন সংঘন করেছেন। দ্বিতীয়বার বিএসপি বিধায়কদের নিজের দলে জায়গা করে দিয়েছেন। এটা নৈতিকতা বিরোধী কাজ।'
টেপকাণ্ডে এদিন সকাল থেকেই একে অপরকে নিশানা করেছে বিজেপি ও কংগ্রেস। ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে পদ্ম শিবির। জবাবে কংগ্রেস বলে 'গণতন্ত্রে হত্যায় দলীয় ভূমিকার কথা স্বীকার করেছে বিজেপি। তবে আমরা কেন ওই কথোপকথন রেকর্ড করেছি এবং তার আইনি বৈধতা নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে।'
এদিন কংগ্রেসের মুখপাত্র পবণ খেরা বলেছেন, 'রাজস্থানে দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করেছে বিজেপি। আমরা সকলেই এর সাক্ষ্মী। প্রত্যেকদিন নতুন আইনজীবীর মাধ্যমে সংকট তৈরি করছে বিজেপি। গণতন্ত্রে হত্যায় দলীয় ভূমিকার কথা স্বীকার করেছে বিজেপি। তবে ওরা যখন হত্যালীলা চালাচ্ছে তখন তা কেন ওই রেকর্ড করেছি এবং তার আইনি বৈধতা নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে।'
রাজস্থানের অশোক গেহলট সরকারকে ফেলে দেওয়ার যড়যন্ত্র করছে বিজেপি। দু'টি অডিও টেপ তুলে ধরে শুক্রবার বিজেপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। এমনকী এই যড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়েরের করা হয়েছে। এবার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা রাজনীতিকদের ফোনে'আড়ি পাতার' অভিযোগ তুললো বিজেপি। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে পদ্ম শিবির। তবে, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে 'ষড়যন্ত্রে'র যে অভিযোগ রাজস্থানের শাসক দল এনেছে সে সম্পর্কে এদিন বিজেপির কেই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এদিন বিজেপি মুখপাত্র সঞ্জীব পাত্র বলেন, 'রাজস্থানে রাজনৈতিক নাটক করছে কংগ্রেস। রাজস্থানের এই টালমাটাল পরিস্থিতির জন্য বিজেপি দায়ী নয়। এটা কংগ্রেসের ঘরের ঝামেলা। আমরা আগেও বলেছি ওই অডিও টেপ নকল।' তাঁর দাবি, 'সরকার বাঁচাতে কংগ্রেস অসাংবিধানিক ও বেআইনি পথ বেছে নিয়েছে।' রাজ্য সরকারকে নিশানা করে তাঁর প্রশ্ন, 'কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যে দলেরই হোন না কেন প্রত্যেকে জানবতে চায় তাঁদের ফোনে কি আড়িপাতা হচ্ছে? আমরা জানতে পেরেছি অসাংবিধানিক কার্যকলাপ চলছে। রাজস্থানে কি জরুরি অবস্থা চলছে?'
'কংগ্রেসের মধ্যেই ষড়যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু, দোষ দেওয়া হচ্ছে বিজেপিকে। ওরা টেপ প্রকাশ্যে এনেছে বিজেপিকে দোষী সাব্যস্ত করবে বলে।' শনিবার কংগ্রেসকে নিশানা করে এই অভিযোগ করেন সম্বিত পাত্র। তাঁর দাবি, 'আইন মেনে ফোনে আড়িপাতা যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে যা হয়েছে তা বোইনি ও মিথ্যাচার। তাই সিবিআই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।' এরপরই পাত্র জানান, 'আমাদের নৈতিকতা স্পষ্ট। কোনও বানানো গল্পের মাধ্যমে আমাদের টলানো যাবে না।' মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের জবাবের দাবি জানান সম্বিত পাত্র।
মরু রাজ্যের রাজনীতিতে টানাটান উত্তেজনা। শুক্রবারই কংগ্রেস দাবি করে রাজস্থানে সরকার ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি। দুটি অডিও বার্তায় প্রকাশ্যে আনা হয়। এখানেই রাজস্থানের এক শীর্ষ বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের সরকার ফেলতে দর কষাকষি করছেন বলে দাবি করে হাত শিবির। দুই দলীয় বিধায়ককেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে কংগ্রেস।
এদিকে মানেসরের হোটেলে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েছিল রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। কিন্তু, রাজস্থানের পুলিশকে হোটেলে ঢুকতে বাধা দেয় হরিয়ানার পুলিশ। যদিও হাইকোর্টে আপাতত স্বস্তি পেয়েছে টিম পাইলট। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও ব্য়বস্থা নিতে পারবেন না স্পিকার, এমন নির্দেশই দিয়েছে রাজস্থান হাইকোর্ট। আগামী সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এ মামলার শুনানি মুলতুবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য়, স্পিকারের দেওয়া বরখাস্তের নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতের দ্বারস্থ হয় টিম পাইলট।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন