মরু ঝড়ে উপমুখ্যমন্ত্রী সহ মন্ত্রী পদ গিয়েছে শচীন পাইলটের। তাঁর ঘনিষ্টদেরও পদ কেড়ে নিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, লড়াই এখানেই শেষ নয়। বরং গেহলটের গদি বাঁচাতে দীর্ঘ আইনি ও কৌশলী লড়াইয়ে জোর দিচ্ছে হাত শিবির। বুধবারই স্পিকার সি পি যোশীর দফতর 'বিদ্রোহী' কংগ্রেস বিধায়কদের নোটিস দিয়েছে। আগামী শুক্রবারের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকালই চিফ হুইপ মহেশ যোশী স্পিকার স্পিকারের কাছে 'বিদ্রোহী' বিধায়কদের পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে বুধবারও শচীন পাইলট তাঁর বিজেপি যোগের গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রী গেহলট ও দলের তরফে জয়পুরে আসা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অজয় মাকেন ও রণদীপ সুরজেওয়ালা আইনি এই পদক্ষেপ নিয়ে মঙ্গলবার দফায় দফায় আইনজীবী অভিষেক মণু সিংভির সঙ্গে কথা বলেছেন। বিধায়ক হিসাবে 'বিদ্রোহী'দের পদ কেড়ে নেওয়া হলে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে আর কোনও বাধ থাকবে না। অন্যদিকে পদ খারিজের বার্তায় পাইলট শিবিরের বেশ কয়েকজন বিধায়ককে নিজেদের শিবিরের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আপাতত এই দুটি বিষয়কে মাথায় রেখেই যাবতীয় পদক্ষেপের পথে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
একদিকে, হুইপ সত্ত্বেও পরিষদীয় বৈঠকে হাজির হননি 'বিদ্রোহী'রা। অন্যদিকে, তাঁদের বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতেই 'বিদ্রোহী'দের বিধায়কপদ খারিজের দাবি জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে।
মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীকে সরানোর পরিষদীয় বৈঠকে বলা যেতে পারে। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে বিধানসভার অন্দরে আস্থা ভোটের দাবি জানানো হলে স্পষ্ট হচ্ছে যে বিদ্রোহীরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার ফেলতে তৎপর।' জানা গিয়েছে যে মঙ্গলবার সকালেই বিধায়ক পদ খারিজের খসড়া লেখা হয়েছিল। ' যা চিফ হুইপের কাছে হস্তান্তরিত করা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শচীন পাইলট তাঁর বিজেপি যোগের গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, রাজস্থানের কয়েকজন নেতা এমন রটনা ছড়িয়েছে। তবে, আমি বিজেপিতে যাচ্ছি না। রাজস্থানে কংগ্রেসকে সরকারে ফেরাতে আমি চেষ্টা চালিয়া যাব।'
তবে, চিফ হুইপ মহেশ যোশী 'বিদ্রোহী' বিধায়কদের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। এক শীর্ষ কংগ্রেস নেতার কথায়, 'এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস ছাড়বেন না। বেশ কয়েকজন নির্বাচন চান না, আবার অনেকেই বিজেপিতে যেতে রাজি নন। তাই শচীন ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনা খুবই জরুরি।'
এক্ষেত্রে বিধায়ক পদ খারিজের আবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন 'বিদ্রোহী' বেশ কয়েক জন বিধায়ক। আপাতত এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে গেহলট এন্ড কোম্পানি।
তবে, কংগ্রেসের অন্দরের এই বিবাদকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া গেরুয়া বাহিনী। বুধবারই বৈঠকে বসছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরারাজে সিন্ধিয়া, বিজেপির জাতীয় সহসভাপতি ওম মাথুর, রাজ্য সভাপতি সতীষ পুনিয়া, বিরোধী দলনেতা গুলাব চাঁদ কাটারিয়ারা। দলের পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতেই এই বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। পদ্ম বাহিনী মনে করছে, গেহলট সরকার ধরে রাখতে পর্যাপ্ত বিধায়কের সংখ্যার দাবি করলেও 'খেলা' এখনও বাকি রয়েছে। আপাতত তাই 'ঘরে-বাইরে'র প্রতিপক্ষকে মেপেই পদক্ষেপে আগ্রহী কংগ্রেস।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন