ভোটে পরাজয়ের পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু মঙ্গলবার হঠাৎই ফেসবুকে উদয় হলেন রাজীববাবু। তাঁর পোস্ট ঘিরে চরম অস্বস্তিতে বিজেপি। একই সঙ্গে রাজ্য রাজনীতিতে বাড়ল জল্পনা। দিল্লিতে গিয়ে যখন বাংলার আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কথা বলছেন শুভেন্দু অধিকারী, তুলে ধরছেন ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা, ঠিক সেই সময়ই শুভেন্দুর সেই দাবির বিরোধীতায় সরব হলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন ফেসবুক পোস্টে প্রাক্তন বনমন্ত্রী লিখেছেন, 'সমালোচনা তো অনেক হল…মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি, আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত, রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে 'কোভিড' ও ইয়াস, এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা'
ভোটের আগে তৃণমূলে 'দমবন্ধ' পরিস্থিতি ও কাজ না করতে পারার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজীব। চাটার্ড উড়ানে দিল্লিতে গিয়ে যোগ দেন বিজেপিতে। তারপর ভোট পর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তৃণমূলকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। কিন্তু একুশের ভোট জোমজুড় থেকে পরাজিত হতেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এই বিজেপি নেতা। তবে, পরাজয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়র প্রশংসা করেছিলেন রাজীববাবু। তখন থেকেই জল্পনা ফের কী তাহলে জোড়া-ফুলে ফিরতে আগ্রহী দলত্যাগী এই নেতা। এদিন তাঁর ফেসবুক পোস্টে সেই জল্পনা আরও কয়েকগুণ বাড়ল। ক্রমশ স্পষ্ট যে, গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আরও পড়ুন- Suvendu Adhikari: ‘বাংলার অবস্থা ৩৫৬-র থেকে খারাপ’, শাহকে নালিশ শুভেন্দুর
৩৫৬ জুজু নিয়ে দলের ভিন্ন সুর রাজীবের গলায়। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাজে অহেতুক ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। এবার একইভাবে বোসুরো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সরকারের সমর্থনে করলেন ফেসবুক পোস্ট। এঁরা দুজনেই নয়, ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া সোনালি গুহ, সরলা মুর্মু, অমল আচার্যরাও পুরনো দলে ফিরতে চেয়ে আর্জি জানিয়েছেন।
দলীয় সতীর্থের 'বেসুরো' মন্তব্য নিয়ে অবশ্য এখনও কোনও মন্তব্য মেলেনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তবে পদ্ম শিবিরের যে বিড়ম্বনা বেড়েছে তা স্পষ্ট। রাজীবের ফেসবুক পোস্ট দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। দেখার যে, প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গেরুয়া বাহিনী কী ব্যবস্থা নেয়।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যেয়র পোস্ট নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'রাজীব যা বলছেন তার গুরুত্ব রয়েছে। প্রমাণ হচ্ছে যে বিরোধী দলনেতা দিল্লিতে গিয়ে যে দাবি করেছেন তা ভিত্তিহীন। তাই বলবো বিজেপি রাজ্য সরকারকে আক্রমণের আগে নিজেদের ঘর সামলানোর প্রস্তুতি নিক।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন