বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরওয়াপসিতে কী নেত্রীর সিলমোহর পড়ল? শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজীবের বৈঠক ঘিরে সেই জল্পনাই মাথাচাড়া দিল। এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দফতরে যান বিজেপি নেতা। সেখানেই তাঁদের আঘ ঘন্টারও বেশি সময় বৈঠক হয়।
এই সাক্ষাৎ নিয়ে কিছুই খোলসা করতে চাননি তৃণমূলের রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "রাজীবের সঙ্গে দলের শীর্ষ কোনও নেতার বৈঠক হয়েছে কিনা জানি না। তবে, উনি বিজেপির নীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন বলেই জেনেছিলাম। এর থেকে বেশি কিছু বলার এক্তিয়ার আমার নেই।" এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে তাঁর 'সদিচ্ছা' নেই বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য
ভোটের আগে নাটকীয়ভাবে তৃণমূল ছেড়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। চাটার্ড উড়ানে ধরে দিল্লিতে গিয়ে অমিত শেহর উপস্থিতিতে যোগ দেন পদ্ম শিবিরে। এরপর প্রচারে রতৃণমূলের বিরুদ্ধে রনংদেহী মেজাজে দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেককে। যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ভোটে পরাজিত হন। এরপরই ভিন্ন সুরে বাজতে শুরু করেন দলবদলু এই নেতা।
আরও পড়ুন- ‘উপনির্বাচনে তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে’, মুকুলের মন্তব্যে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি
সোনালি গুহ থেকে সরলা মুর্মু, দিব্যেন্দু বিশ্বাস থেকে অমল আচার্য- ২রা মে-র পর সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে ফের পদ্ম ছেড়ে জোড়া-ফুলে ফেরার আবেদন করেন। চিঠি না দিলেও রাজীবের আচরণেই মিলেছিল তৃণমূলে ফিরতে চাওয়ার ইঙ্গিত। ক্রমেই ফেসবুক পোস্টে দলের উল্টো লাইনে গিয়েছেন তিনি। বিজেপির নাছোড় বিরোধিতার সমালোচনা করে কখনও মমতা মন্ত্রিসভাকে কাজ করতে দেওয়ার সমর্থনে সোচ্চার হয়েছেন। আবার কখনওবা তৃণমূল মুখপত্র কুণাল ঘোষের বাড়িতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যদিও এই সাক্ষাৎকে রাজীব ও কুণাল দু'জনেই 'সৌজন্য' বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতার ঘরওয়াপসির সলতে পাকানোর কাজ তখন থেকেই শুরু বলে মনে করা হচ্ছিল। এদিন যেন সেই অনুমানই আরও পোক্ত হল।
অবশ্য তৃণমূলের তরফে আগেই বলা হয়েছে দলবদলুদের ফেরাতে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কারা ফিরতে পারেন পুরনো দলে? মুকুল রায়ের ফের তৃণমূলে যোগদানের দিনই তা স্পষ্ট করেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, "দল ত্যাগীদের মধ্যে যাঁরা নরম পন্থী অর্থাৎ ভোটের প্রচারে তৃণমূলকে অতিরিক্ত কটূ আক্রমণ করেননি তাঁদের ফের দলে ফেরানো হতে পারে।" এক্ষেত্রে মুকুল রায়কে নরমপন্থী শিবিরের সদস্য বলেই মনে করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, অভিষেকের সঙ্গে এদিন রাজীবের সাক্ষাতের পর মনে করা হচ্ছে একই দলে হয়তো ঠাঁই পেতে পারেন রাজ্য মন্ত্রিসভায় মমতার প্রাক্তন সতীর্থ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন