অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের প্রাক্তন দুই সেচমন্ত্রী বিরুদ্ধে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী দুজনেই এখন বিজেপিতে। ইয়াসে কেন বাঁধ ভেঙে গ্রাম তলিয়ে গিয়েছে তা নিয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি নিয়ে জবাব দিয়েছেন প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এবিষয়ে মুখ খোলেননি আরেক প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে বুধবার তাঁকে ফোনে ধরা গেল।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীনই অরূপ রায়ের সঙ্গে বনিবনা ছিল না রাজীবের। আমফান পরবর্তী সময়ে তা একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। মঙ্গলবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পোস্টের পর ফের গোঁসা হয়েছেন রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। বিষয়টাকে যে তিনি ভালভাবে নিচ্ছেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এদিন অরূপ রায় মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচারের কথা। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "এসব অভিনয় হচ্ছে।" একদিকে তৃণমূলের কড়া আক্রমণ, পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ রাজীবের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করতেও ছাড়ছে না। ফাঁপড়ে পড়রা অবস্থা ডোমজুড়ের বিজেপি প্রার্থীর।
আরও পড়ুন- Suvendu-Modi Meeting: বাংলায় বিপর্যেয়র পর শুভেন্দুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক মোদীর, কী ইঙ্গিত?
আরও পড়ুন- Rajib Banerjee: ‘গদ্দার-বেইমান’, ডোমজুড়ে রাজীবের বিরুদ্ধে পোস্টার, তৃণমূলে না ফেরানোর আবেদন
সেচ দফতরের বাঁধ নির্মাণ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাঁধ নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। মূলত রাজ্যের প্রাক্তন দুই মন্ত্রীর মধ্যে বেশিরভাগ সময় দফতরের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগের জবাব পেতে বহুবার এই বিজেপি নেতাকে ফোন করা হলেও টানা রিং হয়ে গিয়েছে। কখনও ফোন ধরলেও প্রশ্ন শোনার পর 'কেটে' গিয়েছে। তারপর আর ওই ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। মোবাইলে কল করলেই শোনা যাচ্ছিল নট-রিচেবল। বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে রাজ্যেয়ের প্রাক্তন মন্ত্রী সেচ দফতরের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রশ্নর জবাবে বলেন, "এখন আমি কিছু বলব না।" পাশাপাশি অরূপ রায়ের সমালোচনা নিয়েও তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়ে দেন। তবে মন্ত্রী জানিয়েছেন, গতকাল ফেসবুক পোস্টে নিজের মতামত বলেছেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে কিছু জানানোর হলে সাংবাদিক বৈঠক করে জানাবেন।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল, মঙ্গলবার ফেসবুকে পোষ্ট করে মমতা সরকারকে একপ্রকার সমর্থন জুগিয়ে বার বার দিল্লি দৌঁড়ঝাপ, ৩৫৬ ধারার জুজু নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। এই পোস্ট নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। তাহলে কী তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা পাকা করতেই সোশাল মিডিয়ায় ওই পোস্ট করেছেন রাজীব? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। এরপরই এদিন রাজীবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অরূপ রায়। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দল যাতে সহজে তাঁকে না ফেরায় তার জন্যই চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন একদা তাঁর ক্যাবিনেট সতীর্থ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন