শুভেন্দুর দোসর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন করে অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের বন মন্ত্রী। হরিদেবপুর এরাজনৈতিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের দূর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন রাজীব। বলেন, 'ভালকে খারাপ, খারাপকে ভাল বলতে পারি না তাই আমার নম্বর কম। অন্যদের বেশি। স্তাবকতা করলেই নম্বর বেড়ে যায়। দলে ক্ষমতা লোভীরাই জায়গা পেয়ে যাচ্ছেন। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তারা স্তাবক বলে সামনের সারিতে। যখন মানুষ ভাল কাজ করতে আসে, তখন পিছন থেকে টেনে ধরে।' একই সঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, 'যারা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকে তারাই এখন নেতৃত্বের সামনের সারিতে।'
সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনার অন্ত নেই। শুভেন্দু দল ছাড়তে পারেন বলে জোর চর্চা। এ প্রসঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'ওর মত নেতা চলে গেলে দলে অবশ্যই শূন্যতা সৃষ্টি হবে।'
এই প্রথম নয়। আমফান পরবর্তী দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছিলেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বলেছিলেন, 'দলকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে শুধু চুনোপুঁটিকে ধরলেই হবে না, রাঘব বোয়ালদের ধরতে হবে। তা না হলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।' এই মন্তব্যের পরই হাওড়ার বিধায়কের ক্ষোভ প্রশমণে সক্রিয় হন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয় তাঁকে।
কিন্তু শনিবার ফের বেসুর রাজীব। তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে মমতা ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ হাকিম জানান, 'আসলে কাজ করতে করতে হতাশা আসে। শূন্যতার কোনও স্থান নেই। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের মাথার উপরে রয়েছেন।'
তৃণমূল সূত্রে খবর, হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়ের সঙ্গে মন্ত্রী রাজীব বনদ্যোপাধ্যায়ের বিরোধ কারোর অজানা নয়। এদিকে অরূপ রায়কে দলেই একাংশ মদত যোগাচ্ছে। যা নিয়েই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যেয় ক্ষোভ বাড়ছে। যার বহিঃপ্রকাশ নেত্ৃত্বের বিরুদ্ধে 'অসন্তোষ'।
দলীয় নেতৃত্বকে রাজীবের তোপ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় বলেছেন, 'যাঁরা প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করছেন আজ এটাই তাঁদের কথা। ঠিকই বলেছেন রাজীব। এটাই তৃণমূল।'
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কিন্তু, ভোট যতই এগোচ্ছে প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যাচ্ছে তৃণূলের মন্ত্রী, বিধায়ক, কাউন্সিলরদের। আর তাতেই অস্বস্তি বিঁধছে জোড়া-ফুলে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন