প্রায় ২৭ বছর ধরে জেলে বন্দি রয়েছে ছেলে। বন্দিদশা কাটাতে চেষ্টার কোন কসুর বাকি রাখেননি মা। কিন্তু কোনভাবেই জেলের ঘানি টানা থেকে ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেননি। এবার তাই ছেলের কষ্টে ব্যাকুল মা ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
ছেলের নাম এ জি পেরারিভালান। মাত্র ১৯ বছর বয়সে জেলের চৌহদ্দিতে প্রবেশ। যে সে অপরাধ নয়, খোদ দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যা মামলায় আজীবন কারাবাসের সাজা ভোগ করছেন পেরারিভালান। পেরারিভালানের মতো আরও ৬ জন একই সাজা ভোগ করছেন। রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের দোষীদের রেহাই দেওয়ার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছে তামিল নাড়ু। কিন্তু দক্ষিণের এই রাজ্যের আর্জি কার্যত নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ খবর নিয়ে চর্চা শুরু হতেই ৭১ বছর বয়সী বৃদ্ধা তাঁর ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য আওয়াজ তুললেন।
১৯৯১ সাল থেকে ছেলের বন্দিদশা ঘোচানোর জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন পেরারিভালানের মা। এ প্রসঙ্গে ৭১ বছর বয়সী বৃদ্ধা বললেন, "আমাদের মামলা সুপ্রিম কোর্টে ছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে নয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে আমার ছেলে গ্রেফতার হয়েছিল। ২৭ বছর ধরে জেলে বন্দি রয়েছে ও। মাঝে শুধু একবার, গত বছর প্যারোল পেয়েছিল।" ছেলের জন্য ব্যাকুল মা আরও বললেন, "আমার ছেলের মৃত্যু জেলে হোক, এটাই যদি আমাদের এই ব্যবস্থা চায়, তবে আমার ছেলে এমন যন্ত্রণা নিয়ে বাঁচতে চায় না।" ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন পেরারিভালানের মা।
আরও পড়ুন: Rajiv Gandhi Assassination: ৯ ভোল্টের ব্যাটারি কিনে ২৭ বছর জেলে
পেরারিভালানের আইনজীবী এ প্রভু রামসুব্রহ্ম্যণম বলেন, সাত দোষীর শাস্তি মকুবের আর্জি যদি রাষ্ট্রপতি খারিজ করে থাকেন, তা তিনি ভারতীয় সংবিধানের ৭২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী করে থাকতে পারেন। পেরারিভালানের আইনজীবী আরও বলেন যে, রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা কখনই ক্ষমাপ্রার্থনার আবেদন করিনি। সাত দোষীকে রেহাই দেওয়া হবে কিনা, এ বিষয়টি রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে ছিল। দোষীদের রেহাই দেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ অস্বাভাবিক ঘটনা। এ প্রসঙ্গে পেরারিভালানের আইনজীবী আরও বলেন যে, রাষ্ট্রপতির কাছে যদি এ সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে, রাজ্যের অধিকার কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্র। ভারতীয় সংবিধানের ১৬১নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে পারে রাজ্য, একথার উল্লেখ করেন ওই আইনজীবী।