Advertisment

রবিবার ভাঙড়ে মিছিল, পাল্টা কর্মসূচি জেলা প্রশাসনের

রবিবার পাওয়ার গ্রিড বিরোধীদের মহামিছিল ভাঙড়ে। এদিকে ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও এদিনই একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রাখা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে হাঁস-মুরগি বিলি, ঋণদান প্রভৃতি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
meeting for bhangar rally

রবিবার মহা মিছিলের ডাক দিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের বর্তমান নেতৃত্ব। (ফোটো- ফিরোজ আহমেদ)

ফিরোজ আহমেদ: ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের প্রধান মুখ অলীক চক্রবর্তী পুলিশ হেফাজতে। আদালতের নির্দেশে ভাঙড়ে প্রবেশ নিষেধ আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর।  ভাঙড় আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার দুই কারিগর এই প্রথম জমি কমিটির বৃহৎ কর্মসূচির বাইরে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার মহা মিছিলের ডাক দিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের বর্তমান নেতৃত্ব। এই মিছিল ভাঙড়ে তাঁদের নিজেদের কাছে শক্তি যাচাইয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষা অন্যদের কাছে শক্তি প্রদর্শনেরও। আর এই পরীক্ষায় তাদের ডাহা ফেল করানোই লক্ষ্য জেলা প্রশাসন তথা শাসক দলের।

Advertisment

অলীক নেই, নেই শর্মিষ্ঠাও। আন্দোলনের প্রধান এবং বহিরাগত দুই মুখের অনুপস্থিতিতে পাওয়ার গ্রিড বিরোধীদের বড়সড় কোনও সফল জমায়েত মানেই প্রশাসন ও সরকারের চরম ব্যর্থতা। কিন্তু অলীক ধরা পড়ার পর এলাকায় কোনও হিংসাও চাইছে না সরকার। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে ভাঙড় অশান্তির কারণে ফের দেশের মানচিত্রে উঠে আসুক, এমনটা একেবারেই চাইছেন না সরকার তথা প্রশাসনের সর্বময় নেতৃত্ব।

এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের মধ্যে আস্থা অর্জন করতে সক্রিয় প্রশাসন। গত দু মাস ধরে ওই এলাকার মানুষ জনকে নানা সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে কতটা কাজ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশাসন নিজেও নিশ্চিত নয়। ফলে মিছিলের দিন, রবিবার হওয়া সত্ত্বেও সরকারি কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছে।  স্থানীয় মানুষের কাছে এদিন সরকারি সুযোগ সুবিধা তুলে দিতে উপস্থিত থাকবেন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। একই দিনে প্রশাসন ও জমি কমিটির দুই কর্মসূচি কে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ চড়ছে বিতর্কিত পাওয়া গ্রিড এলাকায়। এরই মধ্যে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধায় অনিয়মের অভিযোগে পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অলীক চক্রবর্তী সহ অন্য আন্দোলনকারীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে ৮ ই জুলাই রবিবার পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন নতুনহাট বাজার থেকে হাড়োয়া রোডের শ্যামনগর বাজার পর্যন্ত মহামিছিল করা হবে। মিছিল শেষে শ্যামনগরে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখবেন গণ আন্দোলনের নেতৃত্ব। এই মহা মিছিলের সমর্থনে বিগত কয়েক দিন ধরে পোলেরহাট ২ নং অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে মিটিং করে প্রচার চালানো হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে। অলীক-শর্মিষ্ঠা ছাড়াই এই মিছিল বিশাল আকার ধারণ করবে বলে দাবি করেছেন জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান। মির্জার বক্তব্য,  "প্রতিটি গ্রাম মানুষ শূন্য হয়ে যাবে। মহিলারা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন হাতে নিয়ে মিছিলে অংশ গ্রহণ করবে।"

ঠিক এই জায়গাটাতেই নজর দিচ্ছে প্রশাসনও। রবিবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণপ্রদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া পোলেরহাট ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্যাম্প করে ৫০০ জনকে হাঁস মুরগি দেওয়া হবে ওই দিন। এর পাশাপাশি কাঁটালিয়া হাইস্কুলে কৃষক দের জন্য কিশান ক্রেডিট কার্ড এর ক্রেডিট ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে । এই ক্যাম্প থেকে ভাঙড় ২ নং ব্লকের কৃষকরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করতে পারবে বলে জানা গিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের দাবি, মানুষ এখন আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বিস্তীর্ণ পাওয়া গ্রিড এলাকার মানুষ কে আর্থিক ভাবে স্বয়ংসম্পন করতে হাঁস - মুরগি ও ছাগল দফায় দফায় বিতরণ করা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে এও জানা গিয়েছে, ভাঙড় সমস্যার সমাধান করতে আবারও জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন।  সোমবার আলিপুরে নিউ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে  আন্দোলনকারীদের মধ্যে ১৪ জন প্রতিনিধিকে চিঠি দিয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে আন্দোলনকারীদের তরফে পাওয়ার গ্রিড বিষয়ে তাদের পক্ষের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরকারকে আলোচনা করার যে দাবি তোলা হয়েছিল, সে দাবি মেনে নিয়ে এই বৈঠকে তেমন ‘অভিজ্ঞ/বিশেষজ্ঞ’ ব্যক্তিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

Bhangar power grid
Advertisment