দক্ষিণ ত্রিপুরার মাতাই গ্রামে রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামনে চলে এল ক্ষমতাসীন বিজেপি ও পূর্ব ক্ষমতাসীন সিপিএমের লড়াই। সিপিএমের অভিযোগ, ওই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে এক কমিউনিস্ট ও আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতার স্মারক সরিয়ে দিয়ে।
বৃহস্পতিবার সিপিএম রাজ্য় নেতা তাপস দত্ত ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেস ডট কমকে জানিয়েছেন, ‘‘বিজেপি সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক এবং সনাতন সংস্থার ত্রিপুরার দায়িত্বে থাকা মৃণাল সেন ওই স্মারক সরিয়ে রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। ওই এলাকায় বুড়া কালীর মন্দির রয়েছে, যে মন্দিরের সঙ্গে বাংলাদেশ এবং পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানে যোগাযোগের ইতিহাস রয়েছে। ওখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে স্রেফ বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে।’’
আরও পড়ুন, উত্তাল কেরালা, হিংসায় মদতের জন্য আরএসএস-কে দায়ী করলেন পিনারাই বিজয়ন
তাপস দত্ত সহ অন্যান্য বাম নেতারা এ নিয়ে বেলোনিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা জেলাশাসককে চিঠি লিখে ওই স্মারকটিকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
তবে দক্ষিণ ত্রিপুরার পুলিশ সুপার জল সিং মীনা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন।
সংবাদ প্রতিনিধিকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কোনও স্মারক সরিয়ে সে জায়গায় মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘটনার কথা আমার জানা নেই।’’
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বিজেপি সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক জানান, কমিউনিস্টরা তাদের শহিদ স্মারক বানানোর জন্য বেআইনি ভাবে একজনের জমি দখল করে রেখেছিল।
তিনি বলেন, ‘‘গত ২৫ বছরের বাম রাজত্বে সাধারণ মানুষের কোনও কথা শোনা হয়নি। এই জমি সিপিএম দখল করে রেখেছিল। মাতাইয়ে রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সময়ে যে মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, সেই মঞ্চে আমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জমির আসল মালিক।’’
বিজেপি নেতা আরও বলেন, তাঁরা রাম রাজ্য চান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওখানে রাম মন্দির বানানো হবে।’’
নিজেদের খাদ্য উৎপাদনের জন্য ত্রিপুরার আদিবাসী মানুষ ঝুম পদ্ধতিতে চাষ করে থাকেন। ১৯৬৮ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার বনভূমিতে ঝুম চাষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর পর মোহিনী ত্রিপুরার নেতৃত্বে আদিবাসী রমণীরা সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৯৬৮ সালের ১৭ মার্চ, আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের গুলিতে মারা যান মোহিনী ত্রিপুরা।
১৯৭৮ সালে ত্রিপুরায় নৃপেন চক্রবর্তীর মুখ্যমন্ত্রিত্বে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হওয়ার পর মোহিনী ত্রিপুরার স্মরণে একটি গ্রাম, একটি স্কুল ও একটি কমুনিটি সেন্টার গঠিত হয়।
Read Full Story in English