রবিবার রাম নবমীর দিনে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় (UoH) ক্যাম্পাসের ভিতরে কয়েকটি পাথরে গেরুয়া রঙ ও পতাকা লাগিয়ে 'রাম মন্দির' গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকী অস্থায়ী সেই পাথরের কাঠামোটিতে শ্রীরামচন্দ্রের ছবিও রাখা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র ইউনিয়ন এই ঘটনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডানপন্থী সংগঠনগুলি ক্যাম্পাসের 'গেরুয়াকরণ' করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে।
আম্বেদকর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এএসএ) এবং স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এসএফআই) বিশ্ববিদ্যালয়ের 'গেরুয়াকরণ' উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অহিন্দু ছাত্রছাত্রীদের প্ররোচিত করতে বা উসকানি দিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার জন্য অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদকেই (এবিভিপি) দায়ী করেছে বাকি ছাত্র সংগঠনগুলি। এদিকে, এবিভিপি এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্পাসের ভিতরে তৈরি করা ওই মন্দিরের কাঠামো নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি। যদিও এই উদ্যোগকে ছাত্রদের ধর্মীয় স্বাধীনতা বলেই মনে করছে এবিভিপি।
রবিবার হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষদের হোস্টেল-এফ এবং প্রধান ওয়ার্ডেন অফিসের কাছে একটি গেরুয়া রং করা পাথর পাওয়া গিয়েছে। গেরুয়া রঙের পতাকা-সহ একটি গাছের নীচে ওই পাথরের কাঠামোটির মধ্যে শ্রীরাম চন্দ্রের কয়েকটি ছবিও রয়েছে। ওই পাথরগুলিতে 'ওম' এবং স্বস্তিকা প্রতীক আঁকা রয়েছে।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম রায়ে স্বস্তিতে হার্দিক, দাঙ্গা মামলায় দোষী সাব্যস্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ
এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের 'গেরুয়াকরণ'-এর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগে সরব হয় ছাত্র সংগঠনগুলি। UoH ছাত্র ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এই ধরনের ধর্মীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে একটি বিজ্ঞপ্তি বা সার্কুলার জারি করার আবেদন জানিয়েছে। UoH ছাত্র সংসদের সভাপতি অভিষেক নন্দন বলেন, ''উপাচার্যের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। পাথরের ওই কাঠামোটিতে সাদা রং করার জন্য এবং ছবিগুলি সরানোর জন্য আবেদন করেছি। দু'দিন পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।''
এদিকে, এপ্রসঙ্গে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র প্রফেসর কাঞ্চন মল্লিক বলেন, ''বিষয়টি নজরে আসতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাঠামোটি সরানোর জন্য বলা হয়েছে।'' এবিভিপি-এর জাতীয় সহ-আহ্বায়ক (কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়) শ্রাবণ বি রাজ বলেন, ''এব্যাপারে আমাদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। বিষয়টি নিয়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিতর্ক তৈরি করার জন্য বাম ছাত্র গোষ্ঠী এবং আম্বেদকারপন্থীরাই দায়ী।''
Read full story in English