২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্য়ে সাফল্য়ের মুখ দেখতে রথের ওপরই ভরসা রাখছে বিজেপি। একসময় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি লালকৃষ্ণ আদবানীর রথই জাতীয় রাজনীতিতে পথ দেখিয়েছিল দলকে। বিহারে রথ আটকে ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। তা সত্ত্বেও রথযাত্রায় লাভবান হয়েছিলেন গেরুয়া শিবির। তাই পশ্চিমবঙ্গে চতুর্থবার বেশ বড় পর্যায়ের রথযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। একইসঙ্গে রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে একাধিক রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি নিতে চলেছে পদ্মশিবির। রথ দেখা ও কলা বেচার তত্ত্ব নিয়ে পথে নামছে বিজেপি।
এর আগে রথযাত্রার দিনক্ষণ ছিল ৩, ৫ ও ৭ ডিসেম্বর। এবার রথযাত্রার কার্যক্রম ২ দিন করে পিছিয়ে গিয়েছে। সোমবার রাজ্য় বিজেপি দপ্তরে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রথযাত্রা হবে ৫, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর। নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সমাবেশকে লক্ষ্য় করে সমাপ্ত হবে রথযাত্রা। জানুয়ারি মাসে ব্রিগেডে সভা করার কথা রয়েছে বিজেপির। তবে এখনও চূড়ান্ত দিনক্ষণ স্থির হয়নি। যদিও বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা জানিয়েছিলেন, ২৩ জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা করবে বিজেপি।
রথাযাত্রার মাধ্য়েম জনসম্পর্ক বাড়বে বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব। একইসঙ্গে সাংগঠনিক ভাবেও দলের শক্তিবৃদ্ধি হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য়জুড়ে সার্বিক প্রচার সেরে নিতে পারবে গেরুয়া শিবির। এককথায় রথযাত্রা ও কলাবেচা দুইই সেরে নেবে পদ্মশিবির। বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, অন্য় রাজ্য়ে বিধানসভা ভোট থাকায় রথের দিনক্ষণ পরবির্তন করা হয়েছে। রথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে অন্য়ান্য় রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রীরা এরাজ্য়ে আসবেন। অন্য় দিকে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির রথাযাত্রাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কটাক্ষ, বিজেপি বড়লোকদের দল। ওরা থাকে রথে। আমরা থাকি পথে।
রাজ্য় বিজেপি সূত্রে খবর, প্রথম রথটি যাত্রা শুরু করবে বীরভূমের তারাপীঠ থেকে। দ্বিতীয়টি কোচবিহার ও তৃতীয়টি গঙ্গাসাগর থেকে। প্রতিটি রথের যাত্রার শুরুতে হাজির থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। প্রতি রথের উদ্বোধন হবে দুপুর ১টায়। ৪০-৪২ দিন ধরে চলবে রথ। সকাল ৯ টা থেকে ৬টা পর্যন্ত রথ চলবে। যাত্রাপথে ৩৫০০ জনকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।
গেরুয়া বাহিনীর এই রথ প্রতি লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বিধানসভায় পৌঁছবে। রাজ্য় নেতৃত্ব পর্যায়ক্রমে দফায় দফায় এই রথে নেতৃত্ব দেবেন। বিজেপি শাসিত রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রীরা ছাড়াও অন্য় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এরাজ্য়ে আসবেন রথযাত্রার মনিটরিং করতে। যাত্রাপথে ৬০টি বড় সভা। ২০০টি ছোট সভা করবে বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির বাজি তিনটে রথ। জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে অত্য়াধুনিক মানের তিনটে বাসকে রথে পরিনত করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, জনসংযোগ বাড়াতে রথ যাত্রাকে সফল করতে বাড়ি কুপনের মাধ্য়মে অর্থ সংগ্রহ করবে দল। বন্য়া, খরা হোক বা না হোক রাজ্য় সিপিএম সারাবছর ১ টাকা থেকে ১০০ টাকা কুপনের মাধ্য়মে অর্থ জোগাড় করত। তখনও সিপিএমের নেতারা বলতেন, এটাই তাঁদের জনসংযোগ। সেই পথেই এবার হাঁটছে রাজ্য় বিজেপি।