শোভন-বৈশাখী-রত্না, বঙ্গ রাজনীতির এই ‘ত্রয়ী’কে ঘিরে টানটান নাটক! এক সপ্তাহের ব্যবধানেই তৃণমূলের দেওয়া দায়িত্ব থেকে ‘স্বেচ্ছায়’ সরে দাঁড়ালেন শোভন-পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। পুরভোটের মুখে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের কেন্দ্র বেহালা পূর্ব ও ১৩১নং ওয়ার্ডে তৃণমূলের দায়িত্ব পালনে তিনি ‘ব্যর্থ’ হবেন, এটা বুঝেই নিজেই আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে দাবি করেছেন রত্না।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টার বৈঠক করেন শোভন-বান্ধবী তথা বিজেপির সদস্য বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কি মমতা-বৈশাখীর বৈঠকের পরই রত্নার এহেন ‘ভোলবদল’? যদিও রত্নার দাবি, ‘‘মমতা-বৈশাখীর বৈঠকের সঙ্গে আমার সরে দাঁড়ানোর কোনও যোগসূত্র নেই’’।
আরও পড়ুন: শোভন চাইলে আমি হাসিমুখে সরে যাব: রত্না
অন্যদিকে, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও বললেন, ‘‘রত্নার সরে দাঁড়ানোয় যে শোভনের তৃণমূলে ফেরার রাস্তা মসৃণ হল, এতটা সহজ রাজনীতি বোধহয় নয়’’। নবান্নে মমতা-বৈশাখী বৈঠকের সঙ্গে রত্নার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির যে কোনও যোগসূত্র নেই, তা কার্যত একবাক্যে মেনেছেন তাঁরা, যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্তভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনীতির কারবারীদের একাংশ।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘শোভনবাবু যদি তৃণমূলে ফিরে এসে বলেন রত্নাকে সরিয়ে দাও, আমিই দেখব। তাহলে আমি হাসিমুখে ফিরে আসব। শোভনবাবু দায়িত্ব নিক আমরা সকলে চাই’’। তাহলে কি সেই ইঙ্গিত দিয়েই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন রত্না?
আরও পড়ুন: নবান্নে মমতার কাছে বৈশাখী! তৃণমূলেই কানন?
কেন সরলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়?
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে শোভন-পত্নী বলেন, ‘‘বেহালা পূর্ব কেন্দ্র আমার হাতের তালুর মতো চেনা নয়। অনেক বড় একটা এলাকা। যেখানে কাজ করতে আমার অসুবিধে হবে। দল আমায় দায়িত্ব দিয়েছিল কারণ যাতে সাফল্য এনে দিতে পারি। আমার মনে হয়েছে যদি আমি ব্যর্থ হই তাহলে দলের জন্য ক্ষতি। তাই আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলাম। প্রথম থেকে যখন বুঝে গিয়েছি যে ব্যর্থ হব, সেজন্য সরে দাঁড়িয়েছি’’। এরপরই রত্না বলেন, ‘‘নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে বৈশাখী কী বলেছেন, আর মমতা কী বলেছেন, তার সঙ্গে এটার কোনও যোগ নেই। এমনটা ভাবার কারণ নেই যে বৈশাখী মমতাকে কিছু বলেছেন, আর আমি সরে দাঁড়ালাম। শোভনবাবুর কথা ভেবে ছাড়িনি, দলের কথা ভেবে ছেড়েছি’’।
আরও পড়ুন: ‘করোনায় কানন যেন সাবধানে থাকে’, বৈশাখীকে পরামর্শ উদ্বিগ্ন মমতার
কী বললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়?
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে শোভন-বান্ধবী বলেন, ‘‘কেউ বলছেন ওঁকে (রত্না) সরানো হয়েছে, আবার কেউ বলছেন, উনি সরেছেন। এতে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। কে কেন দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন, কার কেন মনে হচ্ছে তিনি পেরে উঠবেন না, সেটা তাঁর ব্যাপার। আমি আমার যোগ্যতা সবথেকে ভাল বুঝব। আমি আমার অক্ষমতা ভাল করে বুঝব। সেইমতো আমি সিদ্ধান্ত নেব। আর উনি বাংলার গর্ব মমতার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে শোভন ফিরে আসবে, আর উনি থাকলে শোভন ফিরবে না, রাজনীতিতে এমন সরল সমীকরণ বোধহয় না সম্ভব’’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
Get all the Latest Bengali News and West Bengal News at Indian Express Bangla. You can also catch all the Politics News in Bangla by following us on Twitter and Facebook
Web Title: