রিজিওনাল কম্প্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) চুক্তিতে যোগ দেয়নি ভারত। ঘরে বাইরে চাপের মুখেই মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস ও সঙ্ঘ পরিবার এই চুক্তির বিরোধী ছিল প্রথম থেকেই। পরে সেই বিরোধীতায় মাত্রা যোগ করে দুগ্ধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষ ও কর্পোরেটরাও। এরই মধ্যে কৃষি নির্ভর হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে আশাপ্রদ ফল করতে পারেনি বিজেপি। তাই ভবিষ্যতে ভোটের কথা ভেবেই আরসিইপিতে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রর।
কংগ্রেস আরসিইপি চুক্তিকে আগেই দুর্দশাগ্রস্ত বলে দাবি করেছিল। এই চুক্তি করলে দেশের অর্থনীতি আরও মন্দা হবে বলে জানিয়েছিল হাত শিবির। কংগ্রেস সভানেত্রী বলেছিলেন, 'এটি কৃষক,ছোট উদ্যোগী এবং দোকানদারদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে চলেছে। দলের নেতাদের বলেন, 'রিজিওনাল কম্প্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি বাস্তবায়িত হলে কৃষি উৎপাদন ও কৃষকের সমস্যা হবে। সতর্ক থাকতে হবে।'
আরও পড়ুন: বিপাকে নির্বাচন কমিশনার লাভাসা, ‘পদের অপব্যবহার’ তদন্তে চিঠি ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে চিঠি সরকারের
চুক্তিতে সই করার বিপক্ষে ছিল সঙ্ঘে পরিবার। তাদের দাবি ছিল, একেই সস্তার চিনা পণ্যে ছেয়ে রয়েছে ভারতের বাজার। তার উপরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে শামিল হলে, তাদের সঙ্গে দামের লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারবে না দেশীয় শিল্প। দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতিযোগিতায় এ দেশের গোয়ালারা পিছিয়ে পড়বে। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভগবত গত অক্টোবরে সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, দেশীয় শক্তি ও সন্ধির উপর ভিত্তি করেই চুক্তি হওয়া উচিত। না হলে বিপদ বাড়বে। শাখা সংগঠন জাগারণ মঞ্চও সুর চড়ায় সরকারের এফডিআই প্রস্তাব, বিলগ্নীকরণ ও আসন্ন বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, রিজিওনাল কম্প্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ হচ্ছে একগুচ্ছ চুক্তি। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিশ্বের ১৬টি দেশ। এই ১৬টি দেশের মধ্যে রয়েছে ১০টি আসিয়ানভুক্ত রাষ্ট্র এবং চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ভারত। ভারত এবং ১৫ টি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের নেতারা সোমবার থাইল্যান্ডে ‘আরসিইপি’ তৈরির ক্ষেত্রে সাত বছরের আলোচনার সফল সমাপ্তি ঘোষণা করবে, এমনটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাঙ্ককে তিন দিনের আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের সময় আরসিইপি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যে বিলম্ব হয়েছে তার নেপথ্যে ভারতের “নতুন দাবি” এবং শুল্ক সম্পর্কিত বিষয়কেই দায়ী করা হয়। তারপরই জানিয়ে দেওয়া হয় ভারত ওই চুক্তিতে সই করবে না। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, 'এই মুক্ত চুক্তি রূপায়ণের আগে দেশের সব চেয়ে গরীব মানুষটিকে নিয়ে ভেবেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি এর ফলে তার কি সুবিধা হবে।'
আরও পড়ুন: সামনেই অযোধ্যা রায়, দলীয় নেতাদের জন্য আচরণবিধি জারি বিজেপির
বিরোধী কংগ্রেস চুক্তি সই না করাকে তাদের সাফল্য বলে মনে করছে। তবে, সোনিয়া গান্ধীদের সেই সুযোগ দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। বিজেপির তরফে বিজয় গোয়েল জানান, 'এখন আরসিইপির বিরোধীতা করছেন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু, তাঁর সরকারই ভারতীয় বাজারের ৭৪ শতাংশ অসিয়ান গোষ্ঠীভূক্ত ইন্দোনেশিয়ার কাছে মুক্ত করে দিয়েছিল। কিন্তু, ইন্দোনেশিয়া ৫০ শতাংশ মুক্ত করেছিল ভারতের জন্য।' ২০০৭ সালে ইন্দো-চিন এফটিএ চুক্তি নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মুখ খুলবেন বলে আশা প্রকাশ করেন গোয়েল।
বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভূয়সী প্রশংসা করেন। জানান, 'দেশের কৃষক, দুগ্ধ শিল্প , উৎপাদন শিল্প, ছোঠ উদ্যোগপতিদের কথা ভেবে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ অত্যন্ত দূরদর্শী।'
The BJP congratulates Hon PM @narendramodi ji, who is recognised world over as a tough negotiator for his decisive leadership to protect our national interest. Under him India’s foreign policy reflects India First
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) November 4, 2019
Read the full story in English