কাজ দেয়নি তত্ত্বের রাজনীতি
তত্ত্বের রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে মধ্যপ্রদেশে। ভারতের হার্টল্যান্ডে ২৩০-এর মধ্যে ১৬৩ আসন পেয়ে ফের ক্ষমতায় বিজেপি। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি কংগ্রেস, ভেবেছিল প্রায় দুই দশকের অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি তত্ত্ব নির্বাচনে কাজ করবে। বিজেপি গোহারান হারবে। কিন্তু, কংগ্রেসই উলটে ৬৬ আসনে নেমে গেছে এই রাজ্যে। হারের কারণ বুঝতে না-পেরে, ইভিএম কারচুপির ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর, বিজেপি দেখিয়ে দিয়েছে যে মধ্যপ্রদেশে তারা যেন এখনও ২০১৩ সালে আছে। সেই বছর ১৬৫ আসনে জয়ী হয়েছিল, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা গেরুয়া শিবির। কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা এই পরাজয়ের অন্তর্তদন্ত করবে।
কল্যাণমূলক প্রকল্প
বিজেপির জয়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ বলে যা মনে করা হচ্ছে, তা হল- চৌহান সরকারের দরিদ্রতমদের জন্য নানা কল্যাণমূলক প্রকল্প। পার্টি, 'লাডলি বেহনা' যোজনাকে একটি 'গেম চেঞ্জার' বলে দাবি করেছে। বিজয়ের পরে তাই চৌহান কিছু মহিলা সুবিধাভোগীকে আশীর্বাদ করেছিলেন। সঙ্গে বলেছিলেন, 'লাডলি বেহনা নে সারা কাঁটে নিকাল দিয়ে (লাডলি বেহনারা সমস্ত বাধা দূর করেছে)।' এই বছরের মার্চ মাসে চালু করা প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে ২৩ থেকে ৬০ বছর বয়সি মহিলাদের কথা মাথায় রেখে ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে মহিলারা মাসিক ১,০০০ টাকা করে পাবেন। অবশ্য, সেই মহিলারাই, যাঁদের পারিবারিক বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার কম। নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ন্যূনতম বয়স কমিয়ে ২১ করা হয়েছে। প্রতিমাসে আর্থিক সাহায্য ১,২৫০ টাকা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- বরফ গলার ইঙ্গিত, কাতারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ প্রাক্তন নৌসেনাকে বাঁচাতে পারবে মোদী সরকার?
মধ্যপ্রদেশে মহিলা ভোটার
মধ্যপ্রদেশের ১.২ কোটিরও বেশি মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। যার জন্য শিবরাজ সরকার ১৩,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মধ্যপ্রদেশে ২ কোটি ৬৭ লক্ষ মহিলা ভোটার। আর, মোট ভোটার ৫.৫২ কোটি। যার জেরে ভোটারদের ৪৮% দিকে, সেই দিকেই যে জিত নিশ্চিত, পোড়খাওয়া শিবরাজের তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। বালাঘাট, মান্ডলা, ডিন্ডোরি এবং ঝাবুয়ার মত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা-সহ মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে অন্তত ১৮টিতে পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের সংখ্যাই বেশি। কংগ্রেস যখন চৌহানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মহিলাদের জন্য মাসিক ১,৫০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই সময় চৌহান উন্নয়নে আরও এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৫% সংরক্ষণের ঘোষণা করেছেন। যা, বিজেপিকে ভালো ফল দিয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নারী সংরক্ষণ আইন পাস করার পটভূমিতে তো বটেই।