পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ফের রক্ত ঝরল মালদায়। এবার সন্ত্রাসের শিকার তিন বছরের এক শিশু। বৃহস্পতিবার ঘটনার সূত্রপাত হয় মানিকচকে বোর্ড গঠন ঘিরে। বোর্ড গঠনের সময়ে তৃণমূল প্রার্থীকে সমর্থন করেন বিজেপির জয়ী প্রার্থী পুতুল মণ্ডল। আর তার জেরেই গুলি করা হল তাঁর তিনবছরের শিশুকে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এই ঘটনার জেরেই পুতুল মণ্ডলের বাড়িতে বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় বিজেপি সমর্থকরা।
অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পুতুল জানান, ''যেহেতু আমি তৃণমুলকে সমর্থন করেছি, সেই কারণেই বিজেপি কর্মীরা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার তিন বছরের শিশুকে আক্রমন করে।'' তবে পাল্টা অভিযোগে তৃণমূলকে দায়ি করেছে বিজেপি পার্টি।
আরও পড়ুন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত ভোট, বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট
এদিন হামলার সময় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান পুতুল ও তাঁর স্বামী। গুলি লাগে ঘরে বিছানায় শুয়ে থাকা তিন বছরের শিশুর মাথায়। এরপর শিশুটিকে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির মাথার গুলি বের করে নেওয়া হয়েছে, এবং চিকিৎসা চলছে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ি করেন বিজেপিকে। তিনি বলেন, সম্প্রতি টিএমসিতে যোগ দেন পুতুল, এবং বৃহস্পতিবার এই দলকে সমর্থন করার কারণেই তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। অন্যদিকে ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন দলের জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, তিনি বলেন, এই ঘটনার জন্য দায়ি টিএমসি, তারাই অন্যান্য দল থেকে প্রার্থী তুলে নেয়।
বিজেপির এক স্থানীয় নেতাও পাল্টা অভিযোগ আনেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, পুতুল এবং তাঁর স্বামীকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে টানে শাসক দল। এই ঘটনাকে ''লজ্জাজনক'' আখ্যা দিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মূখার্জ্জি বলেন, বিজেপির কোনও নীতিবোধ নেই, তারা যেভাবে পঞ্চায়েত এলাকায় আতঙ্ক ছাড়াচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আমডাঙা এখনও ত্রস্ত
পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তিনজনের মৃত্যু হওয়ার পরের দিন আমডাঙার সমস্ত স্কুল ও দোকান-পাট বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি এলাকায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তা জারি হওয়া সত্ত্বেও বোমা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কিছু বোমা অসাবধানতায় ফেটে যায়। সূত্রের আরও খবর, বহিষগাছি এলাকা থেকে বেশ কিছু বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।
গত বুধবার হামলার অভিযোগে দশ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া দশজনকে আপাতত পুলিশি হেফাজতেই রাখা হয়েছে। এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা আমডাঙার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অাধিকারিক মানস দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এদিনই ওই এলাকার প্রাক্তন আই সি তুষার বিশ্বাসের বদলে ভার গ্রহন করেন তিনি।