বাংলার বাঘের মৃত্যুর ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। লালগড়ের বাঘঘোরা জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মৃত্যুর ঘটনায় ২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন রবিকান্ত সিনহা। শুক্রবার লালগড়ের ওই জঙ্গলে বাঘের দেহ প্রথমে দেখতে পান গ্রামবাসীরা। পরে বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়। মৃত বাঘের দেহে ২টি ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। শিকার উৎসবের সময়ে আদিবাসীরাই বাঘটিকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। যে ঘটনায় বন দফতরের ভূমিকা কার্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বন দফতর। ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাঘটিকে মারা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে। বাঘের হানায় জখম ২ ব্যক্তি বাবলু হাঁসদা ও বাদল হাঁসদাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার লালগড়ের বাঘঘোরা জঙ্গলে বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে জঙ্গলে বাঘের দেহটি দেখতে পান স্থানীয় যুবকরা। তারপরেই খবর পৌঁছয় পুলিশ ও বন দফতরে। বাঘের দেহে ২টি ক্ষতচিহ্ন মেলে। ওই ক্ষতচিহ্নগুলি দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাঘটিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আঙুল উঠেছে আদিবাসীদের দিকেই। শিকার উৎসব পালন করতে গিয়েই বাঘটিকে আদিবাসীরা হত্যা করেছে বলে সন্দেহ। যে ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল।
আরও পড়ুন,লালগড়ে মিলল বাঘের দেহ, শিকার করা হয়েছে বলে অনুমান
লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলে ইতিমধ্যেই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। ইতিমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। বনমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে, তা সত্ত্বেও যেভাবে প্রাণী হত্যা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।
অন্যদিকে বাঘটির এই পরিণতি নিয়ে বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরাও। কেন জীবিত অবস্থায় বাঘটিকে উদ্ধার করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এ ঘটনাকে বন দফতরের ব্যর্থতা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘বাঘ কোথায় রয়েছে তা চিহ্নিত করার ব্যাপারে বন দফতর আরও কর্মীদের মোতায়েন করা উচিত ছিল।’’ এ জন্য যে বন দফতর যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়নি, সে ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান। অন্যদিকে এ ঘটনায় আদিবাসীদের নাম জড়ানো প্রসঙ্গে বিমান বসু বলেন, তদন্তের আগে এভাবে আদিবাসীদের দোষারোপ করা দুঃখজনক।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে গোটা ঘটনার খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কে বাঘটিকে মারল, তার তদন্ত করা হচ্ছে বলেও এদিন জানিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।