Advertisment

লালগড়ে মিলল বাঘের দেহ, শিকার করা হয়েছে বলে অনুমান

অবশেষে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্যের যবনিকা পতন ঘটল। লালগড়ের জঙ্গলে উদ্ধার করা হল বাঘের দেহ। শিকার উৎসব পালন করতে গিয়েই আদিবাসীরা বাঘটিকে হত্যা করেছে বলে অনুমান, প্রশ্নের মুখে বন দফতরের ভূমিকা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
royal bengal tiger, west bengal

লালগড়ের জঙ্গলে উদ্ধার বাঘের দেহ। ছবি -ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

অবশেষে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্যের যবনিকা পতন ঘটল। গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে যে, বনকর্মী থেকে গ্রামবাসীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল, সেই বাঘ বাবাজির হদিশ মিলল শুক্রবার। তবে এখানেই ছন্দপতন ঘটেছে। না, জীবিত অবস্থায় দেখা মিলল না সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। শুক্রবার লালগড়ের জঙ্গলে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হল বাঘটির দেহ। বাঘের দেহে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। যে ঘটনায় বন দফতরের ভূমিকা সমালোচনার মুখে পড়েছে। বাংলার বাঘের এহেন পরিণতি দেখে নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল।

Advertisment

ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। আর এই কাণ্ড যে আদিবাসীরাই ঘটিয়েছে, তাও মনে করা হচ্ছে। শিকার উৎসব পালন করার সময়ই বাঘটিকে আদিবাসীরা হত্যা করেছে বলে মত অনেকের। অর্থাৎ, গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে ধরতে কার্যত কালঘাম ছুটেছিল বন দফতরের, সেই বাঘটিকে আদিবাসীরা শেষপর্যন্ত শিকার করেছে। অন্তত এমনটাই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, আদিবাসীরা যদি সত্যি এমন কাণ্ড করে থাকেন, তবে তা লজ্জাজনক।

শুক্রবার লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের দেহটি দেখতে পান গ্রামবাসীদের একাংশ। এরপরই তাঁরা বনকর্মীদের খবর দেন। বাঘের দেহে দুটি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বাঘের দেহটি। ময়নাতদন্তের পরই এ ঘটনা সম্পর্কে আরও সুস্পষ্ট হওয়া যাবে বলে ধারণা। বাঘের হত্যার ঘটনায় লালগড় থানায় এফআইআর দায়ের করা হবে এবং একইসঙ্গে মেদিনীপুর আদালতে অভিযোগ জানানো হবে। একথা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন বনবিভাগের প্রিন্সিপাল চিফ কনজার্ভেটর রবিকান্ত সিনহা।

শুক্রবার লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের মৃত্যুর খবরে যখন তোলপাড় রাজ্য। ঠিক তখনই এক অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী হল এ রাজ্য। মৃত বাঘটির সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা গেল অনেক গ্রামবাসীদের।

বাঘের মৃত্যুর ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক অ্যাখ্যা দিয়ে আইজি(বন্যপ্রাণ) সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা দক্ষ। কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তদন্ত করে দেখা হবে।’’ এ ঘটনায় বন দফতর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন সৌমিত্র দাশগুপ্ত।

গত ২ মার্চ লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায় প্রথমে। তারপর থেকেই বাঘের আতঙ্ক ছড়ায় জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে। লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের হানাতে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। কারণ সেখানে আগে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের কোন অস্তিত্বই ছিল না। বাঘের পায়ের ছাপ মেলার পরই নড়েচড়ে বসে বন দফতর। বাঘ ধরতে কী না কী করেছেন তাঁরা। জঙ্গলের মধ্যে তাঁবু ফেলা হয়েছিল। এমনকি, বাঘের হদিশ পেতে ওই এলাকায় আকাশে ড্রোনও ওড়ানো হয়। কিন্তু কিছুতেই বাঘের দেখা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বাঘের তল্লাশি করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বন দফতরের দুই কর্মীর। গাড়ির মধ্যে দমবন্ধ অবস্থায় ওই দুই কর্মীর মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।

Royal Bengal Tiger
Advertisment