একচেটিয়া মুসলিম বিরোধিতার পরিবেশ থেকে বেরোতে চাইছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। সংঘের লক্ষ্য জাতীয়তাবাদ। আর, ভারতে মুসলিমদের বাদ দিয়ে সেই জাতীয়তাবাদের লক্ষ্যপূরণ অসম্ভব। আর, তাছাড়া ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনও রয়েছে। এই বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে এবার মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের দ্বারস্থ হল আরএসএস। তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংঘ নেতৃত্ব। উদ্দেশ্য, মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে আরএসএসের দূরত্ব কমানো।
ইতিমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে। পাঁচ জন বিশিষ্ট মুসলিম বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে গোহত্যা থেকে অবমাননাকর উল্লেখ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে উভয়পক্ষের মধ্যে। এই জাতীয় যেসব সমস্যা উভয় সম্প্রদায়ের ক্ষতি করছে, ভবিষ্যতেও তা নিয়ে আলোচনা হবে আরএসএস এবং মুসলিম বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে।
দিল্লিতে আরএসএসের অস্থায়ী কার্যালয় উদাসীন আশ্রমে এই বৈঠক হয়েছে। আধঘণ্টা বৈঠক চলার কথা থাকলেও, তা ৭৫ মিনিট পেরিয়ে যায়। বৈঠকে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, আরএসএসের সহ-সরকার্যবাহ কৃষ্ণগোপাল উপস্থিত ছিলেন।
মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের পক্ষে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি, দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং, এএমইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর (অবসরপ্রাপ্ত) জমিরউদ্দিন শাহ, রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা শাহিদ সিদ্দিকি ও শিল্পপতি সঈদ শেরওয়ানি।
কুরেশি এবং সিদ্দিকি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে উভয়পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সিদ্দিকি বলেন, 'এই বৈঠকের পর ভাগবত সংঘের চার পদাধিকারীকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যাঁরা মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখবেন। অন্যদিকে আমরাও মুসলিম বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, লেখক, পেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আরএসএসের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় কী উঠে এল, তা তাঁদের জানাচ্ছি।'
এই বৈঠকের সূচনা করেছেন কুরেশি নিজেই। তিনি বলেন, 'তিনি (ভাগবত) আমাদের জানিয়েছেন যে লোকজন গোহত্যা এবং কাফির শব্দে মোটেও খুশি নয়। প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছি যে আমরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেউ যদি গোহত্যা করে, তবে আইন অনুযায়ী তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। আমরা এটাও জানিয়েছি যে আরবিতে কাফির অবিশ্বাসীদের বলা হয়। আর, এটা এমন কোনও সমস্যা নয় যে তা সমাধান করা যাবে না। আমরা পালটা বলেছি যে যখন কোনও ভারতীয় মুসলিমকে পাকিস্তানি অথবা জিহাদি তকমা দেওয়া হয়, তখন আমরাও দুঃখ পাই।'
Read full story in English