কয়লার কালোবাজারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ হেসে উড়িয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ আরএসএস। আরএসএস-বিজেপি কয়লা দুর্নীতিতে যুক্ত, শুক্রবার রানিগঞ্জের জনসভা থেকে এমনই দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রথম আরএসএস সম্পর্কে এত বড় সংগঠিত অপরাধের অভিযোগ সামনে আসায় রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কী বলছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ?
এ রাজ্যের আরএসএস সম্পাদক জিষ্ণু বসু মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে 'নিছক হাস্যকর' বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আগে আরএসএস বিরোধী কোনও দল এই রকম দুর্নীতির অভিযোগ করেনি। আমাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি"। তাহলে এমন দুর্নীতির অভিযোগের কারণ কী? এই প্রশ্নের জবাবে যিষ্ণুবাবু বলেন, "এখানে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাধীন ভারতে এরকম হিন্দু বিরোধী সরকার কখনও তৈরি হয়নি। যেহেতু আরএসএস এইসব সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির প্রতিবাদ করেছে, তাই উনি এই ধরনের অভিযোগ করছেন"।
আরএসএস-এর অভিযোগ, এই রাজ্যে পরিবারতন্ত্রের ওপর একটা দল চলছে। বিমানবন্দরে সোনাকান্ড ঘটেছে। সুপ্রিম কোর্ট পরিবারতন্ত্রের দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্য করছে। সবাই যখন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীও একটা অভিযোগ করে দিলেন"।
প্রণব মুখোপাধ্যায় নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে গিয়েছিলেন। সেখানে বক্তব্যও রেখেছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে প্রচারে গিয়ে জঙ্গিপুরে কংগ্রস প্রর্থী প্রণব-পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, "কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও বহরমপুরের প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে সাহায্য করছে আরএসএস"। তাহলে কি সত্যিই আরএসএস ওই দুই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীদের নির্বাচনে সাহায্য করছে? এই প্রশ্নের জবাবে জিষ্ণুবাবু বলেন, "এই মুহূর্তে কংগ্রেসকে সমর্থন করে লোকসভায় কোনও সাংসদ পাঠানোর ইচ্ছা নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রেই কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে সংঘ পরিবার। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি একেবারেই নেই"।
প্রসঙ্গত, সংঘের রাজনৈতিক শাখা বিজেপি। তবে রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যায়, অতীতে ইন্দিরা গান্ধীকে সমর্থন করেছে আরএসএস। এ প্রসঙ্গে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। আরএসএস সম্পর্কে ধর্ম নিরপেক্ষ দলগুলি বরাবর সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর অভিযোগ করে। কিন্তু কয়লা কালোবাজারির মতো এমন দুর্নীতির অভিযোগের মুখে এবারই প্রথম সংঘ পরিবার।