আয়াপ্পা মন্দিরের দখল নিতে চাইছে গেরুয়াবাহিনী। শবরীমালাকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য ব্যবহার করছে বিজেপি এবং দক্ষিণপন্থী দলগুলি। মঙ্গলবার এরকম চাঁছাছোলা ভাষাতেই আক্রমণ শানালেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
ঋতুকালীন বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ নিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ সম্পর্কে বিজয়নের অভিযোগ, ‘কর সেবক’ পাঠিয়ে মন্দিরের দখল নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তীর্থযাত্রীদের ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্দির চত্বর থেকে রবিবার রাতে ৬৯ জন সমর্থকের গ্রেফতারির ঘটনার পক্ষে মুখ খোলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করার জন্য কংগ্রেসকেও এদিন এক হাত নেন তিনি।
আরও পড়ুন, ২০১৯-এ ভোটে লড়তে চাই না, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল: সুষমা স্বরাজ
বিজয়নের অভিযোগ, শবরীমালা ইস্যুতে কংগ্রেস-আরএসএস এক হয়ে গেছে।
একদিন আগেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বাম সরকারকে শবরীমালা ইস্যুতে তুলোধোনা করেছেন। তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে গুলাগের অধিবাসীদের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিজেপি যে শবরীমালার ঐতিহ্যরক্ষাকারী সমস্ত ভক্তবৃন্দের সঙ্গেই আছে, সে কথা স্পষ্ট করে একাধিক টুইট করেছেন বিজেপি সভাপতি।
এদিকে বিজয়ন জানিয়ে দিয়েছেন, শবরীমালাকে কোনওভাবেই হিংসার কেন্দ্রে পরিণত করতে দেওয়া হবে না। মন্দির চত্বরে যারা হিংসাত্মক ঘটনার চক্রান্ত করছে তাদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন পিনারাই বিজয়ন।
বিজয়নের অভিযোগ, সংঘ পরিবার বিশ্বাসের নামে শবরীমালাকে ব্যবহার করছে এবং মন্দিরের দখল নিতে চাইছে।
মন্দির দর্শনকারী তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার জন্য সমস্তরকম বন্দোবস্ত করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী।
কেরালার মূল বিরোধী শক্তি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ-কেও এদিন আক্রমণ করেছেন বিজয়ন। তিনি বলেছেন, কংগ্রেসের জাতীয় নেতৃত্ব চায় শীর্ষ আদালতের নির্দেশ পালন করা হোক, আর রাজ্য নেতৃত্ব তা চায় না।
তিনি বলেন, রমেশ চেন্নিতালা (রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা) অজস্র বার তাঁর মত বদলেছেন যার ফলে সংঘ পরিবারের রাজনীতিই সুবিধে পেয়েছে।
রবিবার রাতে যে ৬৯ জন ভক্তকে মন্দির চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন তিনি। বিজয়ন বলেন, সে রাতে মন্দিরের সমাপ্তি সংগীত সম্পন্ন হওয়ার পর, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিছু ব্যক্তি মন্দিরে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
‘‘এদের অধিকাংশই মন্দিরে স্বাভাবিক রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করেনি, চেকিং এড়ানোর জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে ঢুকেছিল তারা।’’
রবিবার রাতে শবরীমালা মন্দিরে যারা ভক্ত সেজে ঝামেলা পাকিয়েছিল তাদের মধ্যে ৬ জন সংঘ পরিবারে সদস্যদের নাম উল্লেখ করে বিজয়ন বলেন, ‘‘শবরীমালা মন্দিরকে পুরোপুরি হস্তগত করার পরিকল্পনা ছিল ওদের।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে বিজেপি-র একটি সার্কুলারেরও উল্লেখ করেছেন, যাতে দলীয় কর্মীদের সংগঠিত ভাবে জড়ো করে অল্পবয়সী মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়।
বিজয়ন বলেন, বিজেপির সার্কুলার অনুসারে শবরীমালা পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেওয়ার গোপন উদ্দেশ্যমাফিক করসেবকদের পাঠানো হয়েছিল।