সব্যসাচী দত্ত বনাম তৃণমূল দ্বন্দ্ব এবার চরমে। রবিবার বিধাননগরের মেয়রের ডানা ছাঁটার পর মুকুল রায়ের সঙ্গে সব্যসাচী দত্তের বৈঠক নিয়ে ইতিমধ্যেই ‘কড়া পদক্ষেপে’র পথে এগোচ্ছে তৃণমূল। মুকুলের সঙ্গে বৈঠক করায় সব্যসাচীকে ‘বেইমান’ ও ‘মীরজাফর’ বলে তীব্র আক্রমণ করেছেন ফিরহাদ হাকিম। সেই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে দলের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সব্যসাচী দত্ত। ফিরহাদকেই পাল্টা ‘বেইমান’ বলে এদিন কটাক্ষ করলেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। একইসঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করলেন সব্যসাচী। দলে থাকবেন কি না, এ প্রশ্নের প্রেক্ষিতে এদিন সব্যসাচীর জবাব, ‘‘সে তো সময় বলবে’’।
আরও পড়ুন: ‘সব্যসাচী মীরজাফর, সম্মান থাকলে দল ছেড়ে দিক’
ঠিক কী বলেছেন সব্যসাচী দত্ত?
‘‘সব্যসাচীর আচরণ আর সহ্য করা যাচ্ছে না, ও দল ছেড়ে দিক’’, সব্যসাচী প্রসঙ্গে সোমবার এমন মন্তব্যই করেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক। ববির সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সোমবার বিধাননগরের মেয়র বলেন, ‘‘প্রতিটি জিনিসেরই ভদ্রতা, সৌজন্য রয়েছে। লিখিত আকারে জানান আমায়। যিনি লিখিত আকারে জানাবেন, তাঁকে জবাব দেব’’। এরপরই ‘মীরজাফর’ মন্তব্য প্রসঙ্গে ফিরহাদকে কটাক্ষের সুরে সব্যসাচী বলেন, শ্রমিকের স্বার্থে দাঁড়ানো যদি বেইমানি হয়, তাহলে এই বেইমানি আগেও করেছি, আবারও করব। শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলা, সোচ্চার হওয়া যদি বেইমানি হয় তাহলে মাথা পেতে নেব’’। মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে বিধাননগরের মেয়র এদিন বলেন, ‘‘মুকুল রায় দাদা হিসেবে এসেছিলেন। পরামর্শ দিতে এসেছিলেন। কে কী বললেন, আর না বললেন... কারও সঙ্গে কথা বললে যদি বেইমান হতে হয়, তাহলে যিনি (ফিরহাদ) বলছেন, তিনি বেইমান কতটা, সেটা চিন্তা করুন’’।
আরও পড়ুন: ‘পিছন থেকে ছুরি মারি না’, মুকুলের সঙ্গে পরোটা-ফিশ কাটলেট খেয়ে দাবি সব্যসাচীর
প্রসঙ্গত, সল্টলেকে সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে মুকুল রায়ের লুচি-আলুর দম খাওয়ার পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চায় রয়েছেন বিধাননগরের মেয়র। এরপর একাধিকবার দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচীকে। এর মধ্যেই সব্যসাচীর বিজেপিতে যোগদান ঘিরে জোর জল্পনা ছড়ায়। সম্প্রতি গত শুক্রবার সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে দলের নেতা তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে নাম না করে কটাক্ষ করেন সব্যসাচী। এর পরই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উঠেপড়ে লাগে তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবার বিধাননগরের মেয়রকে বাদ দিয়ে বাকি কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন ফিরহাদ। সেই বৈঠকে সব্যসাচীর ডানা ছাঁটাই করে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে বিধাননগর পুরনিগমের দায়িত্ব দেওয়া হয়।