Advertisment

দলের এত টাকা আছে! প্রশান্ত কিশোর কোথা থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন, প্রশ্ন সব্যসাচীর

‘‘প্রশান্ত কিশোর কাকে পরামর্শ দিচ্ছেন? দলের কর্মী তো আমিও। যাঁর থেকে পরামর্শ নেব, তিনি আগে কোনওদিন পঞ্চায়েত ভোট করেছেন কি? জানি না’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sabyasachi dutta, সব্যসাচী দত্ত

সব্যসাচী দত্ত ও প্রশান্ত কিশোর।

দু'হাত সমান সচল যাঁর, আভিধানিক অর্থে তিনিই সব্যসাচী। নামের আভিধানিক অর্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে যিনি দু'হাতেই চালিয়ে খেলছেন তিনি বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা (এখনও পর্যন্ত) সব্যসাচী দত্ত। সোমবার একদিকে, ফিরহাদ হাকিমকে যেমন পরোক্ষে 'বেইমান' বললেন, তেমনই দলের অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলেন সব্যসাচী।

Advertisment

এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘সব্যসাচী যা করেছেন, তা আর সহ্য করা যায় না। চাইলে ও দল ছেড়ে দিক’’। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন, ‘‘সব্যসাচীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’’। উল্লেখ্য, দলবিরোধী কাজের জেরে রবিবারই সব্যসাচী দত্তের ডানা ছাঁটা হয়। কিন্তু, দলকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগে সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে তৃণমূলের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে কি রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ? এই প্রশ্নের সপক্ষে তেমন কোনও প্রামাণ্য তথ্য প্রকাশ্যে না এলেও, খানিক ইঙ্গিতই মিলেছে সব্যসাচী দত্তের কথায়। সোমবার বিধাননগরের মেয়র বলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোর কাকে পরামর্শ দিচ্ছেন? দলের কর্মী তো আমিও। যাঁর থেকে পরামর্শ নেব, তিনি আগে কোনওদিন পঞ্চায়েত ভোট করেছেন কি? জানি না’’। প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে গিয়ে এদিন ফের দলের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানান সব্যসাচী। কোথা থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর, এদিন প্রকাশ্যেই এ প্রশ্ন তুলেছেন বিধাননগরের মেয়র। অন্যদিকে, নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের নাম উচ্চারণ করতে গিয়েও রীতিমতো হোঁচট খান সব্যসাচী। বিধাননগরের মেয়র বলেন, ‘‘কী নাম যেন...প্রশান্ত কিশোর না কিশোর কুমার’’! সব্যসাচীর এই 'হোঁচট' খাওয়াকে ইচ্ছাকৃত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: ‘সব্যসাচী মীরজাফর, সম্মান থাকলে দল ছেড়ে দিক’

প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে ঠিক কী বলেছেন সব্যসাচী দত্ত?

রবিবার দুপুরে সব্যসাচীকে বাদ দিয়ে বিধাননগরের অন্যান্য তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে ববি হাকিমের বৈঠকে মেয়রের ডানা ছাঁটার সিদ্ধান্তের পর রাতে সল্টলেকে মুকুল-সব্যসাচী বৈঠক নিয়ে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। রবিবার রাতের বৈঠক ঘিরে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সোমবার আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সে প্রসঙ্গে পাল্টা বলতে গিয়েই এদিন বিধাননগরের মেয়রের মন্তব্য, ‘‘মুকুল রায়, দাদা হিসেবে এসেছিলেন। উনি ভেবেছিলেন, কোনও অসুবিধে আছে, তাই পরামর্শ দিতে এসেছিলেন’’। এরপরই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের নাম নিয়ে সব্যসাচী বলেন, ‘‘মুকুলবাবু বিনা অর্থের বিনিময়ে আমাকে পরামর্শ দিতে এসেছিলেন। আর এখন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের পরামর্শদাতা তো মানুষের টাকায়...নিশ্চয় বিনা পয়সায় পরামর্শ দিচ্ছেন না। কে যেন এসেছেন...প্রশান্ত কিশোর। ওই কিশোর কুমার এসেছেন, দলের টাকা হলেও তো পাবলিক মানি। উনি দলের সদস্য কি না জানি না, উনি কিন্তু পরামর্শ দিচ্ছেন। কোথা থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন? রাজ্য সরকার তো পেমন্ট দিতে পারে না। তাহলে দল দিচ্ছে? দলের এত টাকা আছে! তার মানে দলের ৪০০-৫০০ কোটি টাকা আছে! প্রশান্ত কিশোরের থেকে পরামর্শ নেওয়াটা সৎ, আর মুকুল রায়ের থেকে পরামর্শ নেওয়াটা বেইমানি! তাই তো? ভাল’’।

আরও পড়ুন: ‘পিছন থেকে ছুরি মারি না’, মুকুলের সঙ্গে পরোটা-ফিশ কাটলেট খেয়ে দাবি সব্যসাচীর

প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসঙ্গে এ রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্তও চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। লোকসভা ভোটে সেই বিপর্যয়ের পরই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে একদা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের দ্বারস্থ হয়েছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও সেরেছেন পিকে। প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মেনেই কাটমানি ফেরাতে দলের নেতা-কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, বঙ্গ রাজনীতির অলিন্দে এমন চর্চাই শোনা যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে দলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্টকে নিয়ে সব্যসাচীর এহেন বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

tmc
Advertisment