সব্যসাচী দত্ত বনাম তৃণমূল সংঘাত ক্রমশ ক্লাইম্যাক্সে মোড় নিচ্ছে। আজই বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল। দুপুর ২টো নাগাদ বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করবেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। ইতিমধ্যেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন ২৮ জন কাউন্সিলর। উল্লেখ্য, অনাস্থা আনতে এক তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগে। সূত্রের খবর, এক তৃতীয়াংশের বেশি সমর্থন পেয়েছে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত, বিধাননগর পুরসভায় মোট কাউন্সিলর ৪১ জন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ১ জন সিপিএম কাউন্সিলর ও ১ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর। ৩৯ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মধ্যে একজন সব্যসাচী নিজেই। অর্থাৎ সব্যসাচী বাদে বিধাননগর পুরসভায় রয়েছেন ৩৮ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। গত রবিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিধাননগর পুরসভার ৩৬ জন কাউন্সিলর। ২ জন কাউন্সিলর সেই বৈঠক এড়িয়েছিলেন। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সেই দুই কাউন্সিলরও অনাস্থা পত্রে সই করেন কিনা সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: দলের এত টাকা আছে! প্রশান্ত কিশোর কোথা থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন, প্রশ্ন সব্যসাচীর
এদিকে, মেয়র পদ ছাড়তে নারাজ সব্যসাচী দত্ত। একথা সোমবারই স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। ‘‘দলের কেউ তাঁকে পদ ছাড়তে বলেননি’’ বলে এদিন বারবার জানান সব্যসাচী। এদিন বিধাননগরের মেয়র বলেন, ‘‘প্রতিটি জিনিসেরই ভদ্রতা, সৌজন্য রয়েছে। লিখিত আকারে জানান আমায়। যিনি লিখিত আকারে জানাবেন, তাঁকে জবাব দেব’’। বিধাননগর পুরনিগমে দিনের শেষে ডেপুটি মেয়র জানিয়ে দেন, “মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দলের পক্ষে কারা রয়েছে সেখানেই তা পরিস্কার হয়ে যাবে”।
আরও পড়ুন: ‘সব্যসাচী মীরজাফর, সম্মান থাকলে দল ছেড়ে দিক’
প্রসঙ্গত, সল্টলেকে সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে মুকুল রায়ের লুচি-আলুর দম খাওয়ার পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চায় রয়েছেন বিধাননগরের মেয়র। এরপর একাধিকবার দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচীকে। এর মধ্যেই সব্যসাচীর বিজেপিতে যোগদান ঘিরে জোর জল্পনা ছড়ায়। সম্প্রতি গত শুক্রবার সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে দলের নেতা তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে নাম না করে কটাক্ষ করেন সব্যসাচী। এর পরই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উঠেপড়ে লাগে তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবার বিধাননগরের মেয়রকে বাদ দিয়ে বাকি কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন ফিরহাদ। সেই বৈঠকে সব্যসাচীর ডানা ছাঁটাই করে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে বিধাননগর পুরনিগমের দায়িত্ব দেওয়া হয়।