'লুচি আলুরদম' কাণ্ডের পর থেকেই ক্রমশ গতি পাচ্ছিল জল্পনা। ওয়াকিবহাল মহলে অনেকেই বলছিলেন, তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। মঙ্গলবার বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনাতে আরও ইন্ধন যোগালেন বিজেপির কার্যকরী সমিতির সদস্য মুকুল রায়। জলপাইগুড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলোচনায় মুকুল রায় বললেন, "সব্যসাচী আমার সঙ্গেই আছে।" পরক্ষণেই যোগ করলেন, "গণতন্ত্রের পক্ষে ও। ভারতবর্ষের পক্ষে আছে। উন্নয়নের পক্ষে আছে।"
অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেন নি সব্যসাচী, যিনি কিছুদিন আগেই নিজেকে "তৃণমূলের বিশ্বস্ত সৈনিক" বলে বর্ণনা করেন। জলপাইগুড়িতে মুকুল আরও বলেছেন, "শাসক দলের শীর্ষ নেতারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ২০১০ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। সবাই বলবে, আর তৃণমূল করব না। নরেন্দ্র মোদী প্রত্যাবর্তন করছেন।" শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার ২০১৯ সালের মধ্যে পড়ে যাবে বলে আর একবার দাবি করেন মুকুল।
সব্যসাচী দত্ত সঙ্গে আছেন, দাবি তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের pic.twitter.com/9yEZYQ5uQz
— IE Bangla (@ieBangla) March 27, 2019
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল থেকে দল ভাঙানোয় বিজেপি-র প্রধান কুশীলবের ভূমিকায় যিনি অবতীর্ণ হয়েছেন প্রত্যাশিতভাবেই, সেই মুকুল রায় হঠাৎই দিনকয়েক আগে সপারিষদ হাজির হন সব্যসাচীর বাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গেই তুমুল চৰ্চা শুরু হয় বাংলার রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি সব্যসাচী বিজেপি-র পরবর্তী ‘শিকার’?
যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের পাশে দাঁড়িয়ে পরের দিন সব্যসাচী সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, "মুকুলদা আমাকে জানিয়ে আসেন নি। জানতাম না, প্রেসকে সঙ্গে এনেছেন। এসে লুচি-আলুরদম খেতে চাইলেন। বাড়িতে এসে কেউ লুচি-আলুরদম খেতে চাইলে কী করব?"
আরও পড়ুন: পাগড়ি মাথায় ‘ভারতমাতা কি জয়’! গেরুয়া সরণিতে সব্যসাচী?
কিন্তু দোলের দিন ফের জল্পনা উসকে দেন সব্যসাচী নিজেই। বিধাননগরের সিএফ পার্কে মূলত অবাঙালিদের সংগঠন সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত সব্যসাচী বক্তব্য পেশ করতে উঠেই বলেন, "সঞ্চালক আমাকে চিফ গেস্ট বলছিলেন, বিধাননগরের মেয়র বলছিলেন, কিন্তু আমি আপনাদের ‘ঘর কা ছোরো’ হয়েই থাকতে চাই। তাতেই আমি খুশি, কারণ মেয়র হিসেবে আমি জন্মাইনি, ‘মারো ঘর কা ছোরো হ্যায়’ হয়ে থাকতে চাই শুধু।"
এখানেই না থেমে সব্যসাচী বিতর্ক আরও এক প্রস্থ উসকে দিয়ে বক্তব্যের শেষে 'ভারতমাতা কি জয়' স্লোগান তোলেন। সঙ্গে সঙ্গেই শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে, গেরুয়া শিবিরের পথে কি আরও এক পা বাড়ালেন সব্যসাচী, যাঁর বাড়িতে সপ্তাহকয়েক আগে হঠাৎই ‘সৌজন্য সফর’-এ এসে মুকুল রায় লুচি-আলুরদম খাওয়ার ‘আবদার’ করেছিলেন?