রাজ্যের প্রবীণমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা সাধন পাণ্ডেকে এবার নজীরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করলেন দলের আর এক বর্ষীয়ান বিধায়ক পরেশ পাল। বৃহস্পতিবার পরেশ বলেন, "সিবিআই-এর হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতেই সাধান পাণ্ডে বিজেপিকে সন্তুষ্ট করছে। তাঁকে এখনই দল থেকে তাড়াতে হবে। ওকে দল থেকে বের করে দিলে আমরা সবাই গঙ্গা স্নান করে ভাল করে দলটা করতে পারব।" তৃণমূল সাধনকে কারণ দর্শাতে বলার পর পরেশের এমন মন্তব্য।
উল্লেখ্য, আমফানে কলকাতা বিদ্ধস্ত হয়ে যায়। বাড়িতে বাড়িতে জল, বিদ্যুৎ না থাকায় মহানগর কলকাতার নাগরিকরা নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন এবং দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। এরই মধ্যে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডে তোপ দাগেন কলকাতার পুরনিগমের প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, "ফিরহাদের উচিত ছিল কলকাতার বিধায়কদের সঙ্গে আলেচনা করা এবং প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টাপাধ্যায়ের মতামত গ্রহণ করা।" সাধনের এমন মন্তব্যের পরই তৃণমূলে তোলপাড় শুরু হয়। অন্যদিকে, বিজেপিও এই ঘটনার ফায়দা নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের আর এক প্রবীণ বিধায়ক পরেশ পাল চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন সাধন পাণ্ডেকে। পরেশ বলেন, "বিজেপি সরকারের প্রশাসন অর্থাৎ সিবিআইয়ের হাত থেকে মেয়েকে রক্ষা করতেই গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্বকে সন্তুষ্ট করছেন সাধান পাণ্ডে। উনি এখন উঠে-পড়ে লেগেছেন মেয়েকে কীভাবে বাঁচাবেন তার জন্য।" পরেশের দাবি, "শুধু মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে বেইজ্জত করাই নয়, সমস্ত কাজের মানুষকেই বেইজ্জত করেছেন সাধান পাণ্ডে। এটা ওঁর চিরদিনের স্বভাব। এর জন্য ওঁর নাম দিয়েছি, চোখে আঙুল দাদা। মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ শান্তনু সেন, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষকে অপমানিত করেছেন তিনি। বরো চেয়ারম্যান থেকে কাউন্সিলর কারও সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল নেই।"
উল্লেখ্য, সাধন পাণ্ডের ফিরহাদ সম্পর্কে মন্তব্যের পর বুধবার তাঁকে শোকজ করে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের উত্তর কলকাতার সভাপতি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে শোকজের চিঠি পাঠিয়েছেন। সাধনবাবু জানিয়েছেন, তিনি শোকজের চিঠি পেয়েছেন। এর একটা জবাবও তিনি দিয়ে দেবেন। পরেশ পাল বলেছেন, "ওঁকে শোকজ করেছে। ভবিষ্যতে আর শোকজ নয়। দল থেকে ওকে তাড়াতে হবে। বা ওরই দল থেকে নিজের চলে যাওয়া উচিত।" তবে এখানেই থামেননি শাসকদলের এই বিধায়ক। বর্তমানে আটকে না থেকে অতীতের কথাও টেনে এনেছেন বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ।
তিনি বলেন, "কংগ্রেস করার সময় সাধান পান্ডে বরকতদা, প্রণব মুখোপাধ্য়ায়, সোমেন মিত্র, এমনকী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পিছনেও লাগত। আমাদের নেতা অজিত পাঁজাকে তো মেরেই ফেলল। এবার তৃণমূল কংগ্রেসকে শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। বিজেপি ও সিপিএমের সঙ্গে ঘর করছে। দলে থেকে ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপমানিত করছে। যাকে চার জন ধরে নিয়ে যায়, সেও একটা করাত ধরেছে। সবার রক্ত মাংস খেয়ে নেয়। ও এত বদমাস।"