আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মত হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভায় রামমন্দিরের জিগির তুলে দিলেন বক্তারা। শনিবার শহিদ মিনারের এই সভায় রীতিমত জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখলেন সংগঠনের সদস্যরা। সানতন ধর্ম প্রচার সেবা সমিতির সভাপতি সাধ্বী সরস্বতী তো তাঁর বক্তব্যে আদালতকেও রেহাই দিলেন না। ন্যায়পালিকাকে "অন্যায়পালিকা" বলে সম্বোধন করলেন এই বক্তা। একইসঙ্গে প্রকাশ্য সভাতেই "লাভ জেহাদিদের" ধড় থেকে মুণ্ডু আলাদা করার নিদান দিলেন সাধ্বী সরস্বতী।
ধর্মতলায় শহিদ মিনারের পথে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের এক সমর্থক। ছবি: শশী ঘোষ
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন নানাভাবে মোদী সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। এবার শহিদ মিনারে সভা করে চাপ আরও চাপ বাড়ালো হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। পাশাপাশি মঞ্চ থেকে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান জানালেন বক্তারা। সাধ্বী সরস্বতী তাঁর বক্তব্যে সরাসরি হাতে তলোয়ার তুলে নিতে বলেন। তাঁর কথায়, "৫০-৬০ হাজার টাকার মোবাইল কিনছেন। এক হাজার টাকা দিয়ে তলোয়ার কিনুন। যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। সেনা বা পুলিশ নয়, আমাদেরও কর্তব্য রয়েছে।"
মঞ্চে হাজির ছিলেন সাধু-সন্তরা। ছবি: শশী ঘোষ
একইসঙ্গে লাভ জেহাদিদের বিরুদ্ধেও জেহাদের ডাক দিয়েছেন সাধ্বী। তাঁর নিদান, "মহিলারা তলোয়ার হাতে রাখুন। লাভ জেহাদীদের গলা কেটে দিন। তাহলে কেউ আর তাকাবে না। এদের থেকে দূরে থাকুন।" সাধ্বীর অভিযোগ, "লাভ জেহাদ করে মহিলাদের আরব দেশে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।" তাঁর হুঙ্কার, "একজন সেনাকে মারলে ১০০ জন পাকিস্তানির মুণ্ডচ্ছেদ করতে হবে।" প্রত্যাশিতভাবেই এই বাংলাকে "মিনি পাকিস্তান" বলেও কটাক্ষ করেন তিনি, এবং বিমানবন্দরের কাছে হজ হাউসের মত "গঙ্গাসাগর হাউস" বানানোরও দাবি জানান হিন্দুত্ববাদী নেত্রী।
সভাস্থলে কর্মী-সমর্থকরা। ছবি: শশী ঘোষ
আদালতের উদ্দেশ্যে সাধ্বী বলেন, "একজন জঙ্গির ফাঁসি রদের শুনানির জন্য রাতেও বিচার ব্যবস্থা চালু থাকে। অন্যদিকে রাম মন্দিরের রায়ের ক্ষেত্রে শুধু দিন পরবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এ কী ন্যায়পালিকা না অন্যায়পালিকা!" এমনকী শবরীমালা মন্দিরের রায় নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না আদালতকে।
এদিনের সভা থেকে প্রায় সব বক্তাই রাম মন্দিরের পর মথুরা ও কাশি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দিয়েছেন। সেখানে কলঙ্কমুক্ত করার ডাক দেন তাঁরা। মুসলিম সংগঠন এমআইএমকে নিষিদ্ধ করারও দাবি জানান হিন্দুত্ববাদী নেত্রী। উল্লেখ্য, এ রাজ্যে হিন্দু সংহতি ও এমআইএমকে আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।