সন্দেশখালিতে হিংসার ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপিই। ঘটনার চার দিন পর এ বিষয়ে মুখ খুলে সরাসরি এমন অভিযোগই করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলকর্মী কায়ুম মোল্লাকে প্রথমে 'ওরা' মারতে যায়, বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা । মঙ্গলবার হেয়ার স্কুলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচনে এসে মমতা বলেন, ‘‘ওদের দু’জন মারা গিয়েছে। ওরাই প্রথমে কায়ুমকে মারতে গিয়েছিল। কোনও মৃত্যকেই সমর্থন করি না। নিজেদের গুলিতে মারা গিয়েছে, না কী হয়েছে, তা দেখতে হবে’’। একইসঙ্গে এদিন বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রাজ্যপাল ‘ভুল’ কথা বলেছেন বলেও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের ভাষণ ‘রাজনৈতিক’ বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে ১০ জন মারা গিয়েছেন, রাজ্যপাল বলছেন ১২ জন। মানে পুরোটাই টার্গেট। ওঁকে সম্মান করি, কিন্তু ওঁর রাজনৈতিক ভাষণকে সম্মান করি না’’। বাংলায় হিংসা প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘ভাটপাড়ায় ২ জন মারা গিয়েছে, গলসিতে একজনকে মারা হয়েছে, নিমতায় নির্মল কুণ্ডুকে খুন করা হয়েছে, জগদ্দল, দিনহাটায় খুন করা হয়েছে আমাদের কর্মীকে’’। অন্যদিকে, মৃত ১০ জনের পরিবারকে দলমত নির্বিশেষে রাজ্য সরকার সাহায্য করবে বলেও এদিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিজেপি কি মমতার সরকার ভাঙবে? কী বললেন মুকুল রায়?
বাংলায় হিংসা প্রসঙ্গে এদিনও বিজেপিকে এক হাত নেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘বাংলাকে গুজরাত বানানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে। সবাই একজোট হোন। বাংলা গুজরাত নয়। দাঙ্গাবাজদের ভালবাসি না, তাতে যদি জেলে যেতে হয় কী যায় আসে। বাংলাকে উৎখাত করার চেষ্টা হলে জীবন দিয়ে লড়ব’’। উল্লেখ্য, সোমবারও নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকের পর মমতা বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। আগুন নিয়ে খেলবেন না…রাজ্যে যদি অশান্তি হয়, তার দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না কেন্দ্র’’।
আরও পড়ুন: “তৃণমূল করি, মমতাকে নিয়ে গান লিখেছি, তবু দাদাকে কেন খুন করল তৃণমূল”?
উল্লেখ্য, শনিবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। দুই বিজেপি কর্মী সুকান্ত মণ্ডল ও প্রদীপ মণ্ডল নিহত হন। এ ঘটনায় তৃণমূলকর্মী বলে এলাকায় পরিচিত কায়ুম মোল্লাও নিহত হন। বিজেপির দাবি, তাঁদের আরও কয়েকজন কর্মী এখনও নিখোঁজ। দেবদাস মণ্ডল নামে এক কর্মী নিখোঁজ বলেও দাবি করা হয়েছে পদ্ম শিবিরের পক্ষে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকে বিজেপি। রাজ্য জুড়ে কালা দিবস কর্মসূচি পালন করে পদ্মবাহিনী। বুধবার কলকাতায় ধিক্কার মিছিলেরও ডাক দিয়েছে বিজেপি।