Advertisment

আদর্শগত জয় তো বটেই, অযোধ্যায় রামমন্দিরের সূচনায় আর কী কী বার্তা দিতে মরিয়া বিজেপি?

বিজেপির নজরে আগামী বছরের লোকসভা ভোট।

IE Bangla Web Desk এবং Rajit Das
New Update
Sangh Parivar steps up for Ayodhya Temple as BJP gets Lok Sbha theme song , অযোধ্যায় রামমন্দিরের সূচনায় আর কী কী বার্তা দিতে মরিয়া বিজেপি?

রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের সূচনা। এখন সাজ সাজ রব। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রায় ১৫০০ বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে গিয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন, ভারতের সব প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, সমস্ত জাতীয় দলের প্রধান, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী, শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি, ধর্মগুরু দালাই লামা, চলচ্চিত্র অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, রজনীকান্ত, মাধুরী দীক্ষিত নেনে-রা। মোট নিমন্ত্রিতের সংখ্যা ৮ হাজার। রামমন্দির আন্দোলনের মূল দুই কাণ্ডারি লালকৃষ্ণ আডবাণী, মরলীমনোহর যোশী সহ উমা ভারতী এবং বিনয় কাটিয়ারকেআমন্ত্রণ জানানো হলেও বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের ওইদিনের অনুষ্ঠানে আসতে না করা হয়েছে। সেই আর্জি তাঁরা মেনে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন রামমন্দির ট্রাস্টের প্রধান। ২২ ডিসেম্বর রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সংঘচালক মোহন ভগবত।

Advertisment

আরএসএস সূত্রে খবর, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি অযোধ্যায় হবে ঠিক, তবে দেশ তথা দুনিয়ার সব হিন্দুদের মনে রামমন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে আবেগ চাগিয়ে তুলতে মরিয়া গেরুয়া বাহিনী। ওই দিনের অনুষ্ঠানকে প্রচারে আনতে সংঘ পরিবারের তরফে ইতিমধ্যেই 'সবকে রাম (রাম সবার)' উদ্যোগে জোর দেওয়া হয়েছে। যার অন্তর্গত 'অক্ষত (চাল)' কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সংঘ পরিবার ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ১ থেকে ১৫ জানুয়ারি বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল সংগ্রহ করবে। যা অযধ্যার রামমন্দির নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহ ও একাত্বতা তৈরি কবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমেই সংঘ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের লোকেরা দেশের নান স্থানে থাকা হিন্দুদের বলবে- ২২ জানুয়ারি স্থানীয় মন্দিরে জমায়েত করতে।

শুধু দেশই নয়, বিদেশে বসবাসকারী সব হিন্দুদেরও রামমন্দির উদ্বোধনের অংশ করে নিতে সচেষ্ট আরএসএস। স্থানীয় বা নিকস্থ মন্দিরে সেদিন জমায়েত করে মেগা ইভেন্টটি উদযাপন করতে বলা হবে।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আরএসএসের তরফে শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেছেন, 'লোকেরা অযোধ্যার দিকে মনোনিবেশ করছে, কিন্তু ২২ জানুয়ারি জাতীয়স্তরে অনেক বড় অনুষ্ঠান হবে, কিন্তু দেশ ও দুনিয়াজুড়েও উদযাপনের জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময়অ ওই কর্মসূচিগুলি করতে বলা হয়েছে। যেগুলো অনলাইনে লাইভ হবে। এর ফলে মন্দির ঘিরে উন্মাদনা তৈরি হবে।'

বিজেপির জন্য, রাম মন্দিরের উদ্বোধন বিরাট মতাদর্শগত জয়। যা গত তিন দশকের আন্দোলনের ফল। আডবাণীর নেতৃত্বে রামমন্দির আন্দোলন, জাতীয়স্তরে বিজেপির ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়েছিল। কাশ্মীরথেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সঙ্গেই রামমন্দির স্থাপণ- বিজেপি যা বলে তা করে দেখায়। গেরায়া শিবির মনে করছে যে, লোকসভা নির্বাচনের দৌড়ে অযোধ্যার ঘটনা একটি সমগ্র দেশের সনাতনীদের একটা বিশষে বার্তা।

আরও পড়ুন- ক্ষমতার বিচারে ইন্ডিয়াকে হেলায় টেক্কা এনডিএ-এর, আর্থিক সম্পদের নিরিখে কে কোথায়?

১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ শাসনকাল ছিল। জোট সরকারের বাধ্যবাধকতার দরুন সেই সময় বিজেপি তাদের মূল আদর্শ- রাম মন্দির স্থাপণ, ধারা ৩৭০ বিলোপ ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরে উদ্যোগী হতে পারেনি। তবে এর একদশক পর অবস্থা পাল্টায়। ২০১৪ সালে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লির কুর্সি দখল করে বিজেপি। তারপর থেকেই ক্রমে দলের তিন আদর্শগত নীতি কার্যকরে আইনি সিনমোহরের কাজ শুরু হয়। শেষে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ে তোলার নির্দেশ দেয়।

২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে লোকসভা ভোট হতে পারে। সেই ভোটে রামমন্দির অবশ্যই বিজেপির অন্যতম প্রধান অস্ত্র হতে চলেছে। গেরুয়া বাহিনী মনে করছে, এটির মাধ্যমে দলের আদর্শগত নীতিপূরণই শুধু হয়নি, মানুষের কাছে এর ফলে তুলে ধরা যাবে যে কেন বিজেপি অন্য রাজনৈতিক দলবগুলোর থেকে আলাদা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতার কথায়, ৮১ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হোক, কোভিড টিকা নিশ্চিত করা হোক বা রামমন্দির শেষ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত হোক , 370 ধারা বিলোপ সহ একাধিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ভোটারদের মনে এখন এটাই উঠে আসছে যে- মোদীর প্রতিশ্রুতি মানেই তা বাস্তবায়িত হবেই। এই বার্তাটিকেই পুঁজি করে লোকসভা ভোটের প্রচারে ঝাংপাবে দল।'

Mohan Bhagwat modi Ayodhya Ram Temple RSS
Advertisment