দুর্গাপুজোর মধ্যেই ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ ও বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মধ্যে যুব কমিটি গঠন নিয়ে মতবিরোধ সামনে চলে আসে। প্রকাশ্যেই বিবৃতি দিয়ে রাজ্যে মোর্চার জেলা সভাপতি ও জেলা কমিটি বাতিল করে দেন দিলীপ ঘোষ। পাল্টা বিবৃতি দেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। বিজয়া দশমীর দিন দিলীপ ঘোষকে বিজয়ার প্রণাম জানিয়ে এলেন সৌমিত্র। যুব মোর্চার সভাপতির দাবি, "বিরোধ মিটতে ১ মিনিট যথেষ্ট।"
এবারে দুর্গাপুজোর শুরু থেকেই পদ্মশিবির বঙ্গ রাজনীতিতেই সক্রিয়। সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বিজেপি এই প্রথম দুর্গাপুজোর আয়েজন করে। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরপরই রাজ্য যুব মোর্চার কমিটি গঠন নিয়ে দলের অন্তর্কলহ একেবারে সামনে চলে আসে। রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যুব মোর্চার সমস্ত জেলা কমিটি এবং জেলা সভাপতির পদ বাতিল করা হল। সৌমিত্রর পাল্টা জবাব, এই সিদ্ধান্ত তিনি জানেন না। দুই শীর্ষ নেতার মন্তব্য ঘিরে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। সৌমিত্র সভাপতি পদ থেকে ইস্তফারও হুঁশিয়ারি দেন বলে খবর। এরপর দশমীর দিন পায়ে হাত দিয়ে বিজয়ার প্রণাম সারলেন সৌমিত্র।
প্রথমত, সৌমিত্র খাঁ রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি হওয়ার পর কমিটি গঠন নিয়ে দলে মতবিরোধ শুরু হয়। প্রথমে জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। বিরোধিতা করেন দিলীপ ঘোষ। ঘোষিত জেলা সভাপতির নাম বাতিল করা হয়। কারণ, দলে রাজ্য কমিটি আগে ঘোষণা করার নিয়ম। সূত্রের খবর, মোর্চার রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দেখা যায় রাজ্য কমিটি ঘোষনার পর কোনও পরিবর্তন না করেই ফের জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সূত্রের খবর, পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও কয়েকজনকে রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই নিয়েও বিরোধ তৈরি হয় দলের অভ্যন্তরে। এরপরই সমস্ত জেলা কমিটি ও সভাপতির পদ বাতিল করে দেন দিলীপ ঘোষ। শেষমেষ সোমবার দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিজয়াদশমী করতে যান সৌমিত্র খাঁ। সৌমিত্র খাঁ ইন্ডিয়ান ক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "রাজনীতিতে বিরোধ মেটাতে নিজের দলের মধ্যে এক মিনিটেই সমাধান হয়ে যাবে। কারণ, এরাজ্যে তৃণমূলকে হটানোই তো আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই কোন সমস্যাই সমস্যা নয়।
এরইমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের বিরোধে লাভ হবে তৃণমূলের। ক্ষমতায় না এলে পালাতে হবে অন্যত্র।।রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন, রাজ্য বিজেপি ও দলের মোর্চার বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসায় তার ফায়দা নিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। নানা জল্পনা ও রটনাও বাড়তে থাকবে। বিজয় দশমী উপলক্ষে দুই সভাপতির এই সৌজন্য সাক্ষাতে আদপে বিরোধ মিটল না নেহাতই প্রথা তা আগামী দিন স্পষ্ট হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন