জয়প্রকাশ দাস
সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট নিয়ে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের পুত্র রাসেল আজিজকে সিআইডির তলবে বিতর্ক অব্য়াহত। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন আজিজ ভোট সংক্রান্ত বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন। পোস্টে নানা ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য ছিল বলে অভিযোগ। রায়গঞ্জে রেললাইনের ওপর এক প্রিসাইডিং অফিসারের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় এই অভিযোগের গুরুত্ব আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে।
কিন্তু সেলিমের দাবি, তাঁকে জব্দ করতে না পেরে তাঁর ছেলেকে হেনস্থা করা হচ্ছে। এবং রাসেলের এই হেনস্থার পিছনে মদত থাকতে পারে সিপিএম থেকে বিতাড়িত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের, এমন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সেলিম রক্তক্ষরিত সিপিএমের অন্দরেও এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন গুজব ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে রাসেলের বিরুদ্ধে। দিনভর তিনি নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করে সিআইডি। একাধিকবার তলব করার পর ভবনী ভবনে সিআইডির মুখোমুখি হন রাসেল।
কী লিখেছিলেন তিনি? "উত্তর দিনাজপুর জেলায় তৃণমূল গুন্ডাবাহিনীর গুলিতে একজন প্রিসাইডিং অফিসার, একজন পোলিং অফিসার খুন হলেন। জেলার বেশ কয়েক জায়গায় নির্বাচন কর্মীরা পোলিং থামিয়ে বিক্ষোভ করছেন গুন্ডারাজ আর ইসির বিরুদ্ধে।" ওই পোস্টের শেষে তিনি লিখেছিলেন, "হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে।" এই পোস্ট নিয়েই বিভ্রান্তি ও হিংসা ছড়াতে পারত বলে মনে করেছে প্রশাসন। পোস্টটি কিছুক্ষণ পরে ডিলিট করে দেন রাসেল। কিন্তু ততক্ষণে স্ক্রিনশটের মাধ্য়মে ছড়িয়ে পড়ে সাংসদপুত্রের বক্তব্য।
সিআইডির তলবের পিছনে অবশ্য ষড়যন্ত্রই দেখতে পাচ্ছেন রায়গঞ্জের সাংসদ। তাঁর বক্তব্য়, "ছেলেকে তলব করলেও মূল টার্গেট তো আমি। গত সাত বছর ধরে রাজ্য় সরকার আমার বিরুদ্ধে নানা ভাবে চক্রান্ত করছে। তাতে কোন কাজ হয়নি। শেষমেষ ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে ছেলেকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিল।" এর পিছনে ঋতব্রত বন্দ্য়োপাধ্য়ায় রয়েছেন কিনা সে প্রশ্নের জবাবে সেলিম বলেন, "তৃণমূলের অংশ হিসেবে থাকতেই পারে। ফেসবুক, ট্য়ুইটারে ব্য়ক্তিগত মত প্রকাশ করার অধিকার সকলের আছে। মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।"
যাঁর পোস্ট নিয়ে এত বিতর্ক, সেই রাসেলের বক্তব্য়, সিআইডিকে সবরকম সহযোগিতা করছেন তিনি। বলছেন, "এফআইআরে কী অভিযোগ রয়েছে তা আমাকে জানানো হয়নি। আমি বুঝতে পারছি না আমার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগটা কী!"
আর যাঁর দিকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগের তীর, সেই ঋতব্রত বলছেন, "ঘটনার ফোকাস ঘুরিয়ে দিতে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই পোস্টের পিছনে কে আছে, কেনই বা পোস্ট করার পর তা তুলে নেওয়া হল, এ নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।"