বিদ্রোহ আপাতত মিটল। দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়ের পাশে বলে সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সাফ জানালেন, সিএএ বিরোধীদের সঙ্গে তাঁর হাত মেলানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। বিজেপিতেই রয়েছেন তিনি। নাগরিকত্ব আইন লাগুর বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহের প্রতি তিনি আস্থাশীল বলেও দাবি করেছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ।
হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ে এ দিন শান্তনু ঠাকুর বলেন, 'যারা সিএএ সমর্থন করেনি তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রশ্ন ওঠে না। আমি নিজে ভোট দিয়ে সিএএ পাশ করিয়েছি। সংসদের দুই কক্ষে বিল পাশের পর তা আইনে পরিণত হয়েছে। তাতে এদেশে মতুয়াদের নাগরিকত্ব সুরক্ষিত হয়েছে। এর পর শুধুমাত্র নাগরিকত্ব প্রদানের পর্ব বাকি। করোনা সংক্রমণের জন্য সেটা বিলম্বিত হচ্ছে। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কী পরিকল্পনা তা আগামী মাসেই ঠাকুরনগরে জনসভা করে জানাবেন অমিত শাহ।'
আইনে পরিণত হলেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু না হওয়ায় মতুয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত নয় বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ শান্ত ঠাকুর। দ্রুত আইন কার্যকরী করার দাবি জানান তিনি। এর মধ্যেই কোভিড পরিস্থিতি মিটলে সিএএ লাগু হবে বলে বঙ্গ সফরে এসে জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। আর এতেই আরও 'বেসুরো' হতে দেখা যায় বনগাঁর সাংসদকে। কোভিডের সঙ্গে সিএএ লাগুর কোনও সম্পর্ক নেই বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ান তিনি।
গেরুয়া শিবিরের এই কোন্দল প্রকাশ্যে আসতেই শান্তনুকে কাছে টানতে উদ্যোগ নেয় তৃণমূল। তাঁকে রাজ্যের শাসক দলে যোগদানের আহ্বান জানান তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই হস্তক্ষেপ করে বিজেপি নেতৃত্ব। মতায়া সংঘাধিপতি তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করেন গেরুয়া দলের নেতারা। এরপরই রাতারাতি সুর বদল বনগাঁর বিজেপি সাংসদের। বিদ্রোহী মনোভাব ছেড়ে আপাতত তিনি নরমপন্থী। জানিয়েদিলেন দলেই রয়েছেন তিনি। দলত্যাগের জল্পনা 'ভুয়ো'।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ে বলেন, 'শান্তুনু বা মুকুল রায়- কেউই সিএএ আইনটা কি তা জানেন না। মতুয়াদের ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি। মতুয়ারা প্রথম থেকেই এ দেশেরই নাগরিক। রেশন কার্ড থেকে ভোটার কার্ড। ওদের সব রয়েছে। তাহলে নতুন করে ওদের কী আর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে?'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন