শুক্রবার বিশ্বভারতীতে একসঙ্গে মোদি-হাসিনা, তিস্তা-চর্চার সম্ভাবনা

তিস্তার পাশাপাশি, মোদি-হাসিনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে রোহিঙ্গা শরণার্থী, সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও।

তিস্তার পাশাপাশি, মোদি-হাসিনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে রোহিঙ্গা শরণার্থী, সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sheikh hasina

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

রাভীক ভট্টাচার্য ও শান্তনু চৌধুরী

Advertisment

শুক্রবার দেশের নজরে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দিতে এ দেশে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে শুধু সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াই নয়, আসল নজর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ঘিরে। তিস্তা জলবণ্টন ইস্যুসহ একাধিক বিষয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার কথা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তিস্তার পাশাপাশি, মোদি-হাসিনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে রোহিঙ্গা শরণার্থী, সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও।
তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আলোচনায় থাকবেন কিনা, এখনও সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ কী হবে শেষ পর্যন্ত, তার কিছুটা হলেও দিশা মিলতে পারে শুক্রবার, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনাতে যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে, তার আঁচ পাওয়া গেছে  বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর গলায়। ঢাকা থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, দু দেশের প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন মানেই, দুই দেশের একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবেই। সূত্র মারফৎ জানা গেছে, প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো বৈঠক হতে পারে দুজনের।

আরও পড়ুন, নজরে লোকসভা ভোট, তৃণমূল ও মমতার মন্ত্রিসভায় রদবদল!

Advertisment

ওপার বাংলার সঙ্গে তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে এখনও নারাজ এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিস্তার সমপরিমাণ জলের দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে তিস্তা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি অনুযায়ী তিস্তার ৪২.৫ শতাংশ জল পাবে ভারত, বাকি ৩৭.৫ শতাশ জল পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে এখনও ঝুলে রয়েছে তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ। তিস্তার পরিবর্তে তোর্সার জল ভাগ করার প্রস্তাব দেন মমতা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের কাছে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামনেই ওপার বাংলায় নির্বাচন। নির্বাচনের মুখে তিস্তা জলবণ্টনের মতো দীর্ঘদিনের বকেয়া ইস্যু সমাধান না করলে অস্বস্তিতে পড়বে হাসিনার দল।  বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক শিবাজীপ্রতিম বসুর মতে, বাংলাদেশের মৌলবাদীরা ইতিমধ্যেই হাসিনা সরকারকে চাপে রেখেছেন। ভারত থেকে হাসিনা কী পেয়েছেন, সে নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। আবার আগামী বছরের লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রাখলে মমতা এবং মোদি, দুজনের পক্ষেই এটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। মমতা বেশি জল দেওয়ার ব্যাপারে রাজি হলে সে বিষয়টি তাঁর বিরুদ্ধেই রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবে বিরোধীরা।

আরও পড়ুন, আজ কুমারস্বামীর শপথে যেন অ-বিজেপি জোটের ছবি!

চুরুলিয়ায় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালের সমাবর্তনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হবে শেখ হাসিনার। শনিবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করা হবে।

এদিকে শুক্রবার শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। দু’দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি দেশাত্মবোধক গান ও রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করার কথাও ভাবা হয়েছে বলে জানা গেছে। সংগীত ভবনের প্রায় ৩০ জন পড়ুয়া এই মুহূর্তে মিউজিক্যাল পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনের দিন শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করা হবে এই বিশেষ অনুষ্ঠান।

অনুলিখন: সৌরদীপ সামন্ত

Sheikh Hasina Mamata Banerjee PM Narendra Modi