দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ নন, বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়ক একনাথ শিণ্ডে হলেন মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়রি। উপমুখ্যমন্ত্রী হলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ। তিনিও বৃহস্পতিবার শপথবাক্য পাঠ করেন। শপথবাক্য পাঠের পর তাঁদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর আগে শিণ্ডেকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ফড়ণবিশ। মনে করা হচ্ছিল, উদ্ধব ঠাকরে ইস্তফা দেওয়ার পর বিজেপি সরকার গড়ার দাবি জানাবে রাজ্যপালের কাছে। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত হয়, শিণ্ডেই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। আর শিণ্ডে শিবিরকে সমর্থন করবে বিজেপি।
এরপরই শপথ নিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহারাষ্ট্রের রাজভবনে পৌঁছে যান শিণ্ডে। ফড়ণবিশ আগেই জানিয়েছিলেন, প্রথমে শপথ নেবেন শিণ্ডে। পরে, গঠিত হবে নয়া মন্ত্রিসভা। তবে, ফড়ণবিশ জানিয়েছিলেন তিনি সরকারের বাইরে থাকবেন। কিন্তু, জেপি নাড্ডা থেকে অমিত শাহ জানিয়ে দেন, ফড়ণবিশ এই সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ না-পাওয়ার গোঁসা দূর হয় ফড়ণবিশের। তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে রাজি হন।
বৃহস্পতিবার একসঙ্গে রাজভবনে আসেন ফড়ণবিশ এবং শিণ্ডে। দেখা করেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে। তার পরই সিদ্ধান্ত হয় মহারাষ্ট্রে সরকার গড়বে শিবসেনার শিণ্ডে শিবির। এবং সেই শিবিরকে সমর্থন করবে বিজেপি। বিধানসভায় এখন একক বৃহত্তম দল বিজেপি। ১০৬ জন বিধায়ক এবং শিণ্ডে শিবিরে রয়েছে ৩৭ জন। ম্যাজিক ফিগার ১৪৪ পেতে আর সমস্যা নেই। শিণ্ডের মুখে হাসি ফুটিয়ে নির্দল এবং ছোটদলগুলির বিধায়করাও সমর্থন জানাচ্ছেন। ফড়ণবিশ এই নতুন সরকার গঠনে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি সফল হয়েছেন. সেই কথা মাথায় রেখে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা জানিয়ে দেন, দল ফড়ণবিশকে সরকারের সদস্য হিসাবে দেখতে চায়। তাই তাঁকে শিণ্ডের ডেপুটি হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিন ফড়ণবিশ সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, '২০১৯ সালে এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি আটকাতে গিয়ে জনমতকে অপমান করেছিল শিবসেনা। তার পর মহা বিকাশ আঘাড়ি সরকারের আমলে বেলাগাম দুর্নীতি, দুই মন্ত্রীর বেআইনি লেনদেন ও তোলাবাজি করতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া, মন্ত্রীর দাউদের সঙ্গে যোগ এগুলো মানুষ মেনে নেয়নি।'
আরও পড়ুন মহা-নাটকের যবনিকা পতন! বিধায়ক ধরে রাখা যাবে তো? চিন্তায় NCP-Congress
ফড়ণবিশ আরও বলেন, 'একনাথ শিণ্ডে এবং তাঁর সহযোগীরা কঠোর সিদ্ধান্ত নেন এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে না থাকার। তাঁরা হিন্দুত্ব নিয়ে সমঝোতা করতে চাননি। আমরা আগেও বলেছিলাম, এবং সেটাই মেনে চলছি যে যদি সরকারের পতন হয় তাহলে আমরা বিকল্প সরকার দেব মানুষকে।'
মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগে শিণ্ডে বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দেবেন্দ্র ফড়ণবিশের কাছে কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমাকে এই সুযোগ দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের রাজনীতির ধারা আমরা বজায় রাখব এবং এগিয়ে নিয়ে যাব। বালাসাহেব ঠাকরের আদর্শ এবং হিন্দুত্বকে আমরা কোনওদিন বিসর্জন দেব না।'