মুকুল রায়ের দলবদলের পরই বাংলায় দলত্যাগ আইন কার্যকরের দাবি তুলেছে বিজেপি। মুকুল রায়কে বিধা.ক পদ থেকে ইস্তফার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা তৃণমূলের টিকিটে জেতা শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজে জন্য মরিয়া তৃণমূল। জোড়া-ফুল নেতৃত্বের দাবি, শিশিরবাবু বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তাই তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিস্ফোরক দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি সাফ জানালেন, 'শিশির অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে দলে যোগ দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তবে, তাঁরা সমর্থন করেছেন।'
কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
বিধায়ক মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হলে তা কেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকাকরীর বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হবে না? জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেছেন যে, 'শিশির অধিকারী এবং সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে দলে যোগ দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তাঁরা কয়েকটি ক্ষেত্রে বিজেপিকে সমর্থন করেছেন ও আমাদের দলের হয়ে ভাষণ দিয়েছেন।'
মুকুল রায়ের দলবদল ঘিরে যখন রাজ্য রাজনীতিতে পারদ চড়ছে তখনই শিশির অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতির দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ত্যাগের পরই নিজের দলের বিরুদ্ধে 'বেসুরো' হতে দেখা যায় কাঁথির সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে। জোড়া-ফুলের সঙ্গে ক্রমশই ফাটল বাড়তে থাকে শিশির অধিকারীর। তারই মাঝে জেলা সভাপতি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতাকে। তৃণমূলে ক্রমশ কমতে থাকে শিশির অধিকারীর গুরুত্ব।
শেষ পর্যন্ত ২১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বিজেপির প্রচার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিশির অধিকারী। ওই মঞ্চেই ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। বিজেপির ওই মঞ্চ থেকেই তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বাংলা বাঁচানোর জন্য বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেন ওই তৃণমূল সাংসদ। একইসঙ্গে 'জয় শ্রী রাম' বলেও স্লোগান দিতে সোনা গিয়েছিল তাঁকে। এরপরই তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে, একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে আর তেমনভাবে কোনও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি শিশিরবাবুকে।
এ দিন দিলীপ ঘোষের দাবির পর শিশির অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে ফের বিভ্রান্তি তৈরি হল বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন