দলীয় বিধায়ক ভাঙানোর আশঙ্কায় শিবসেনার নিশানায় ফড়নবিশ। চোখা চোখা বাক্যবাণের পাশাপাশি এবার কিছুটা মজার ছলেই চললো আক্রমণ। সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা টানলেন মহারাষ্ট্রের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন শিবসেনা মুখপত্র 'সামনায়' রাউত লেখেন, 'হিটলারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে দাসত্বের অবসান হয়েছে।' কেন হঠাৎ হিটলারের প্রসঙ্গ উঠে এলো? সেনা মুখপাত্রের যুক্তি, 'মহারাষ্ট্রে আর বিধায়ক কেনা-বেচা সম্ভব নয়।'
মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিধায়ক নেই বিজেপির। ৫০-৫০ ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদ না পেলে শরিক বিজেপিকে সমর্থন না করতে অনড় অবস্থান নিয়েছে শিবসেনা। এদিকে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার আগ্রহ দেখাতেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। এই অবস্থায় ভয় দেখিয়ে বিধায়ক কেনার চেষ্টা করতে পারে গেরিুয়া শিবির। কর্নাটকে অপরেশন লোটাসই তার বড় প্রমাণ বলে মনে করছে সেনা শিবির। তাই মুখে হুঁশিয়ারির সঙ্গেই ফড়নবীশদের বাড়া ভাতে ছাই দিতে মুম্বইয়ে রিসর্টে আটকে করে রাখা হয়েছে সেনার বিধায়কদের।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা রায়ে আমি স্বীকৃতি পেলাম: এল কে আডবানি
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ফড়নবীশ। তাঁকে তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। ইস্তফা দিয়ে ফড়ণবিস বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদ ভাগাভাগি নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। ফোনে শিবসেনা প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু, এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি।’
রবিবার বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপি। রাজ্যপাল সরকার গড়তে আমন্ত্রণ জানানোর পর কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই বৈঠকে।
আরও পড়ুন: বুলবুল মোকাবিলায় ‘তৎপর’ মমতার প্রশংসায় রাজ্যপাল
ক্ষমতায় ফিরতে শিবসেনাকে সমর্থনে নারাজ সোনিয়া গান্ধী। শরদ পাওয়ারকে সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তারপরেই পাওয়ার জানিয়েছিলেন 'সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় বিধায়ক তাদের কাছে নেই। তাই বিরোধী আসনেই বসবেন কংগ্রেস ও এনসিপি।' সঞ্জয় রাউতও পাল্টা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে নেই পাওয়ার। কিন্তু, সে সবকে বড় করে দেখতে নারাজ শিবসেনা। উল্টে রবিবার কংগ্রেসের প্রশংসা রাউতের মুখে। তাঁর কথায়, 'কংগ্রেস আমাদের শত্রু নয়। যদিও জাতীয়স্তরে বহু বিষয়ে আমাদের মতপার্থক্য রয়েছে। আবার অনেক ইস্যুতে আমরা সহমত-ও।'
এদিকে চুপ করে জল মাপছে এনসসিপি নেতৃত্ব। পাওয়ারের নজরে আস্থা ভোট। সরকারকে স্থায়ী করতে ফড়নবীশ আস্তা ভোটে গেলে শিবসেনার অবস্থান কী হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছে তারা। মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের ২৮৮ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১০৫ টি, ফলে বৃহত্তম দল হিসেবে সরকার গঠনের অগ্রাধিকার পায় তারা। কিন্তু সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৫ টি আসনের ‘ম্যাজিক নম্বর’ জোগাড়ে তারা ব্য়র্থ। সেই সুযোগকেই সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে চাইছে উদ্ধব ঠাকরেরা।
Read the full story in English