বাংলায় ৩৫৫ ধারা জারির পক্ষে জোর সওয়াল করলেন রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সাফ দাবি, এ রাজ্যে শুধু বিজেপি-ই নয়, এবার মানুষ চাইছেন ৩৫৫ ধারা জারি হোক। তবে, কেন্দ্র ৩৫৫ জারি করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকলে তাঁর অপত্তি নেই বলেই জানিয়েছেন শুভেন্দু।
ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে পুরভোট শেষে দুই কাউন্সিলর খুন, তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু হত্যা, বগটুই গণহত্যা, হাঁসখালিতে ধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোচ্চার পদ্ম শিবির। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা তলানীতে বলে দাবি তাদের। একই ইস্যুতে দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। এবার মমতা সরকারের আমলে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা অবনতির দাবি করে ৩৫৬-র বদলে ৩৫৫ ধারা কার্যকরের দাবি তুলছে গেরিয়া বাহিনী।
এদিন সিউড়িতে আইন অমান্য কর্মসীচিতে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'বিধানসভা ভোটে বিশাল ভোটে জয় পেয়েছেন উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)। তাই মুখ্যমন্ত্রী পদে উনিই থাকলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে নিক।। বাংলায় ৩৫৫ ধারা জারি করার পরিস্থিতি হয়েছে।'
শুধু শুভেন্দুই নন, এ দিন একই দাবি তুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তাঁর কথায়, ''বিজেপি আজ পর্যন্ত কোনও রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারি করেনি। এটা বিজেপির সংস্কৃতি নয়। কিন্তু, এবার রাজ্যবাসীই ৩৫৫ জারির পক্ষে কথা বলছেন। আমার মনে হয় এবার সেই সময় এসে গিয়েছে। আমরাও কেন্দ্রের কাছে একই দাবি জানাব। বাংলার মানুষের ন্য়ায় বিচারের অধিকার রয়েছে।'
৩৫৫ ধারা রাজ্যে জারির দাবি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন যে, 'শুভেন্দু অনেকদিন ঠান্ডা ঘরে ছিল, এবার গরমে আন্দোলনে পথে নেমেছেন। ফলে মাথার তালু গরম হয়ে গিয়েছে। ভুল বকছেন তাই। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে যখন কুৎসিত ঘটনা ঘটে তখন কোথায় থাকে? যোগীরাজ্যে উন্নাও, হাথরসের ঘটনা ঘটলে কোখায় থাকে? ত্রিপুরায় ঢালাও সন্ত্রাসের সময় কোথায় থাকে? বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। অথচ অযথা কুৎসা করা হচ্ছে।'
বিরোধী দলনেতার দাবির মধ্যে বিজেপি-তৃণমূল জোটের গন্ধ পাচ্ছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রীকে রক্ষা করতে সুকৌশলে দিল্লির প্রচেষ্টা রয়েছে তা সকলেই জানেন। তবে শুভেন্দু অধিকারীর এই ধরণের মন্তব্যকে সমর্থন করি না। বিজেপি কি আধাখেচড়া রাজ্য চাইছে? বাংলা বিজেপির ইচ্ছায় দিল্লির মতো হবে নাকি?'
সংবিধানের ৩৫৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যকে বাইরের আগ্রাসন ও অভ্যন্তরীণ গোলযোগ থেকে রক্ষা করা কেন্দ্রের দায়িত্ব। রাজ্য সরকার যাতে সংবিধান অনুযায়ী চলে, তা নিশ্চিতকরণও কেন্দ্রের দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। পশ্চিমবঙ্গে অভ্যন্তরীণ ডামাডোল তৈরি হলে তা থেকে রাজ্যকে রক্ষা করতে চাইলে কেন্দ্র হস্তক্ষেপও করতে পারে।
আরও পড়ুন- উদ্বেগজনক পরিস্থিতি, আজই আলোচনার জন্য মমতাকে চিঠি ধনকড়ের
আরও পড়ুন- হাঁসখালি কাণ্ড: পুলিশে অভিযোগ দায়েরের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা, বিস্ফোরক জবাব মৃতার বাবার