লক্ষ্মীবারের জোড়া ধাক্কার পর আবারও ধাক্কা শাসক শিবিরে। শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল ছাড়লেন আরও এক বিধায়ক। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেইল করে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। তবে, বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না বলেই জানিয়েছেন শীলভদ্র দত্ত। মানুষের ভোটে জিতেই বিধায়ক হয়েছেন, তাই সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবেই বিধায়ক পদ থেকে এখনই তিনি ইস্তফা দিচ্ছে না বলে দাবি তাঁর।
সম্প্রতি 'বেসুরো' বাজচ্ছিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূলে বিধায়ক। দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। দলে যোগ্য সম্মান ও কাজের সুযোগ পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ করেন। টিম 'পিকে'র কাজ নিয়েও তাঁর ক্ষোভ ছিল। ২ নভেম্বর বলেছিলেন ২০২১ সালের বিধানসভায় আর ভোটে লড়বেন না। পরে পিকে-র দল তাঁর কাছে গিয়ে মানভঞ্জনের চেষ্টা করে। কিন্তু বিধায়ক শীলভদ্র নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন।
গত সপ্তাহেই বিজেপির সহ সভাপতি মুকুল রায়ের বাড়িতে যান শীলভদ্র দত্ত। মুকুল রায়কে বড় দাদা বলে সম্বোধন করেন। তখন থেকেই তৃণমূল বিধায়কের বিজেপি যোগের জল্পনা তৈরি হয়। আজ দল ছাড়ার মধ্যে দিয়ে সেই জল্পনাই আরও তীব্র হল।
আরও পড়ুন- “শুভেন্দু কেন, আমি ছাড়লেও দলের কিছু ক্ষতি হবে না”
সূত্রের খবর, শনিবারই বিজেপি-তে যোগদান করতে চলেছেন শীলভদ্র দত্ত৷ মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভাতেই তিনি বিজেপি-তে যোগদান করছেন বলে খবর৷ যদিও সেকথা স্বীকার করেননি শীলভদ্র দত্ত৷ ভবিষ্যতেই সব বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক।
তৃণমূল ছাড়ার পরই বিধায়কের দলীয় দফতরের রংও পাল্টে গিয়েছে। আপাত নীল-সাদার বদলে তাঁর গলীয় দফতরের রং গেরুয়া। বিধায়কের পিছনেই গেরুয়া পোস্টারে রয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের ছবি ও বাণী।
বিধায়কের দলত্যাগ প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেছেন, 'শীলদা ভাল মানুষ। বিজেপিতে আসতে চাইলে ওনাকে স্বাগত জানাব।' অন্যদিতে বিধায়কের দল ছাড়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জোড়া-ফুল শিবির। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, 'কেন এর আগে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ জানাননি তিনি। কেন ভোটের আগে দলকে দুর্বল করা হল। বিজেপিতে যাবেন বলেই অজুহাত খাড় করলেন শীলভদ্র দত্ত।'
গত লোকসভায় ব্যারাকপুর আসনটি বিজেপির দখলে যায়। পদ্ম চিহ্নে জেতেন আরেক তৃণমূল ত্যাগী অর্জুন সিং। এবার দল ছাড়লেন বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। ফলে ভোটের আগে ব্যারাকপুরে মাথা ব্যথা বাড়ল রাজ্যের শাসক শিবিরের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন