West Bengal Municipal Corporation Election Results: চারে ৪ তৃণমূল। তৃণমূলের দখলে থাকছে আসানসোল, চন্দননগর ও বিধাননগর। শিলিগুড়িতে ফুটল জোড়া-ফুল। যদিও এই ভোটকে ‘লোকতন্ত্রের লজ্জা’ বলে গর্জে উঠেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
চন্দননগর ও বিধাননগরে খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। শিলিগুড়িতে গেরুয়া শিবির পেয়েছে মাত্রা ৫টি আসন। পরাজিত হয়েছেন বিজেপির শঙ্কর ঘোষ ও সিপিআইএমের অশোক ভট্টাচার্য। এই পুরনিগমে বামাদের ঝুলিতে মাত্রা ৪ আসন। ঘরের ছেলে তথা তৃণমূলের গৌতম দেবের হাত ধরে এই প্রথম শিলিগুড়ি পুরনিগম পরিচালনার ভার গেল তৃণমূলের হাতে। জিতেছেন গৌতম দেবও। তাঁকেই পরবর্তী মেয়র বলে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে ৪১টির মধ্যে জোড়া-ফুল পেয়েছে ৩৭টি ওয়ার্ড। আসানসোলের ১০৬টি মধ্যে তৃণমূলের দখলে ৯১টি। ৩২টির মধ্যে চন্দননগরে রাজ্যের শাসক দল পেয়েছে ৩১টি। বিধানগরে মোট ৪১টির মধ্যে তৃণমূলের দখলে ৩৯টি ওয়ার্ড।
উত্তরের শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণের বিধাননগর। মাঝে শিল্পাঞ্চল শহর আসানসোল ও গঙ্গার পাশে চন্দনগরে বিপুল জয়ের পেল তৃণমূল। ভোটের ফলে খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁদের প্রণাম, সালাম জানাচ্ছি।’ এবারের ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। ভোটের দিন সন্ত্রাসের অভইযোগে কলাকাত হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করার কথা জানিয়েছে বিজেপি। তবে বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায় ‘আসানসোল, বিধাননগরে কোনও গন্ডোগোল হয়নি। জামুড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ঠের চেষ্টা হয়েছিল।’
বিধাননগর ও চন্দননগরে শতাংশের বিচারে দ্বিতীয় স্থানে বামফ্রন্ট।
বিধাননগরে তৃণমূল পেয়েছে ৭৩.৯৫ শতাংশ ভোট। বামেরা পেয়েছে ১০.৭৬ শতাংশ ভোট। বিজেপি ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৩.৪২ এবং ১.৫ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে চন্দননগরে জোড়া-ফুলের ঝুলিতে গিয়েছে ৫৯.৪২ শতাংশ ভোট। বামেদের ভোট শতাংশ ২৭.৩৬। বিজেপি পেয়েছে ৯.৮ শতাংশ ভোট।
বিধাননগরে মোট ওয়ার্ড ৪১। তৃণমূল জিতেছে ৩৯টি ওয়ার্ডে। ১টি করে ওয়ার্ডে জিতেছে কংগ্রেস ও নির্দল। দাগ কাটতে ব্যর্থ বাম, বিজেপি।
চন্দননগরে ৩৩টির মধ্যে ভোট হয়েছিল ৩২টিতে। এর মধ্যে ৩১টি ওয়ার্ডেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। ১টিতে জিতেছে বাম প্রার্থী।
আসনসোল ধরে রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। ১০৬টির মধ্যে ৯১টি ওয়ার্ডে জয়ী শাসক দলের প্রার্থীরা। বিজেপি পেয়েছে ৭টি ওয়ার্ড। একদা বাম দুর্গেই আজ ধরাশায়ী কাস্তে-হাতুড়ি-তারা। তাদের দখলে মাত্র ২টি আসন। কংগ্রেস ও নির্দলের ঝুলিতে ৩টি করে ওয়ার্ড।
৪১টির মধ্যে শিলিগুড়িতে তৃণমূল পেয়েছে ৩৭টি আসন। বিধানসভার নিরিখে ৩৬টিতে ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকলেও পুরভোটে বিজেপি পেয়ছে ৫টি আসন। বাম, কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৪ ও ১টি আসন।
হাজরায় বিক্ষোভের মুখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আশুতোষ কলেজের সামনে শুভেন্দুকে দেখেই চোর চোর চোরটা…শিশিরবাবুর ছেলেটা স্লোগান ওঠে। শুনেই মেজাজ হারান শুভেন্দু। গাড়ি থেকে নেমে তেড়ে যান তিনি। প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছয় পরিস্থিতি। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা সামাল দেন।
ভোট কারচুপির প্রতিবাদে কলকাতায় ডিসি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপির।
এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

আসানসোলের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে টসে হল ভাগ্য নির্ধারণ। বাম ও তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল একই। শেষমেশ টসের সিদ্ধান্ত হয়। টসে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী।
চার পুরনিগমে ধরাশায়ী বিজেপি। রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন সাসপেন্ড হওয়া নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। সাংবাদিকদের বললেন, মুরলীধর সেন লেনের অফিসে এবার কে পদত্যাগ করবেন, কর্মীরা জানতে চান। সন্ত্রাসের কথা বলে আর পার পাওয়া যাবে না।
'পুরনির্বাচন প্রহসন', টুইটে দাবি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
আসানসোলের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ইভিএম বিভ্রাটের জেরে সব প্রার্থীদের ডেকেছে কমিশন। সূত্রের খবর, ইভিএমের মোট ভোটারের চেয়ে কেউ বেশি ভোট পেলেই তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হবে। না হলে হতে পারে পুনর্নির্বাচন।
এই প্রথম শিলিগুড়ি পুরবোর্ড দখল করল তৃণমূল। ৪১টির মধ্যে এখনও ৩৭টিতে এগিয়ে জোড়া-ফুলের প্রার্থীরা। সিপিএমের দখলে ৫টি ও বিজেপির ৪টি। কংগ্রেস পেয়েছে ১টি আসন। শতাংশের নিরিখে তৃণমূল পেয়েছে ৪৮ শতাংশ ভোট। বিজেপি ২৪ শতাংশ ও বামেদের ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কংগ্রেস ও অন্যান্যরা পেয়েছে ৫ ও ৩ শতাংশ ভোট।
চন্দনগরে ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩০টিতে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা। ১টিতে জয় পেয়েছেন বাম প্রার্থী। শতাংশের বিচারে তৃণমূলের ভোটের হার ৫৬ শতাংশ। বামেরা পেয়েছে ২৮ শতাংশ ভোট। বিজেপি ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৯ ও ১ শতাংশ ভোট।
আসালসোলের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে টসে ভাগ্য নির্ধারণ হবে বাম ও তৃণমূল প্রার্থীর। কারণ ওই দুই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট একই।
আসানসোলের ১০৬টি আসনের মধ্যে এখনও ৮০টিতে জয় পেয়েছেন জোড়া-ফুল প্রার্থীরা। বিজেপি পেয়েছে ৭টি, বামফ্রন্ট ২টি ও কংগ্রেস ৩টি। শতাংশের বিচারে, ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। পেয়েছে ১৬ শতাংশ ভোট। বা ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ১২ ও ২ শতাংশ ভোট। অন্যান্যরা পেয়েছে ১ শতাংশ ভোট।
৪১টির মধ্যে ৩৯টিতে জয়ী তৃণমূল। ১টি করে আসনে এগিয়ে কংগ্রেস ও নির্দল প্রার্থী। শতাংশের বিচারে শাসক দল বিধাননগরে ভোট পয়েছে ৭৪ শতাংশ। আসন না পেলেও ১১ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বামেরা, ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস ও অন্যান্যরা পেয়েছেন ৩ শতাংশ করে ভোট।
বিধাননগরে তৃণমূলের উল্লাস-উচ্ছ্বাস।

ছবি- পার্থ পাল
জয়ের পরই অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন সস্ত্রীক সব্যসাচী দত্ত। দেখা করেছেন নেত্রীর সঙ্গেও।
উত্তরের শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণের বিধাননগর। মাঝে শিল্পাঞ্চল শহর আসানসোল ও গঙ্গার পাশে চন্দনগরে বিপুল জয়ের পথে তৃণমূল। ভোটের ফলে খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁদের প্রণাম, সালাম জানাচ্ছি।’ এবারের ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। হাইকোর্টে যেতে পারে বিজেপি। তবে বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পড়ুন বিস্তারিত
শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের মেয়র হবেন গৌতম দেব। ঘোষণা তৃণমূল নেত্রীর। পড়ুন বিস্তারিত
বিধাননগরের ৩১ নং ওয়ার্ড থেকে ৪,৬৪৪ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত।
শিলিগুড়িতে ৬ নং ওয়ার্ডে পরাজিত সিপিআইএমের অশোক ভট্টাচার্য। অন্যদিকে প্রায় ৩ হাজার ভোটে জয়ী গৌতম দেব।
শিলিগুড়ির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের অভয়া বসু
শিলিগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের লক্ষ্মী পাল
শিলিগুড়ির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জিতলেন কংগ্রেসের সুজয় ঘটক
শিলিগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতলেন তৃণমূলের লক্ষ্মী পাল।
আসালসোলে জয়ী প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি।
বিধাননগরে ৪০টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থীরা। এগিয়ে রয়েছেন ৩১ নং ওয়ার্ডে সব্যসাচী দত্ত, ২৯ নং ওয়ার্ডে কৃষ্ণা চক্রবর্তী, বিধায়ক তাপস রায়ের কন্যাও এগিয়ে রয়েছেন।
গণনার প্রাথমিক প্রবণতা অনুযায়ী শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৬ কেন্দ্রে এগিয়ে তৃণমূল। ২৩, ২৮, ৩০, ৩৭, ৪০ ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে জোড়া-ফুল প্রার্থীরা। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ।
আসানসোলেও ৬টি কেন্দ্রে এগিয়ে শাসক দল তৃণমূল।
চন্দননগরে ১৮টিতে এগিয়ে শাসক দল। ২টি বামেরা এগিয়ে।
বিধাননগরে ৯টি ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে বাম প্রার্থী।
গতবার শিলিগুড়িতে বোর্ড গড়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। যা রাজ্য রাজনীতিতে শিলিগুড়ি মডেল বলে পরিচিত। এবারও কি শিলিগুড়িতে তার পুনরাবৃত্তি হবে? এবার ভোটে বাম ও কংগ্রেস পৃথকভাবে লড়েছিল। তবে ভোট শেষ হতেই প্রয়োজনে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়েছেন সিপিআইএম নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেয়েছেন অধীর চৌধুরীও। ফলে জল্পনা বাড়ছে।
শিলিগুড়ি কলেজে ৬-৭ রাউন্ড ভোটগণনা হচ্ছে এই পুরনিগমে। রাজ্যের উত্তরের এই শহর দখলে এবার মরিয়া তৃণমূল। সাত বছর আগে বোর্ড দখলে শিলিগুড়িতে জোড়া-ফুল ফোটেনি। ২০১৫ সালে তৃণমূল ১৭টিতে, বামফ্রন্ট ২৩টি, কংগ্রেস ৪টি, বিজেপি ২টি ও অন্যান্যরা ১ ওয়ার্ড দখল করেছিল।
চার পুরনিগমের মধ্যে সবচেয়ে বড় আসানসোল পুরনিগম। এইখানে ১০৬ টি ওয়ার্ড রয়েছে। আসানসোলের পুরনিগমে ২২ রাউন্ড ভোটগণনা হবে। ১০৬ টি ওয়ার্ড সমন্বিত আসানসোল পুরনিগমে ভোটার ৯ লক্ষেরও বেশি। সোমবার এই পৌরনিগমে ভাগ্য নির্ধারণ হবে ৪৩০ জন প্রার্থীর। জানা গিয়েছে প্রথম পর্যায়ে ৫৩ টি ওয়ার্ডের ভোটগণনা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ৫৩ টি ওয়ার্ডে। ২০১৫ সালে এই পুরনিগম দখল করে তৃণমূল। কিন্তি গত লোকসভা ও বিধানসভায় ভালো ফল করেছিল বিজেপি। গতবার তৃণমূল ৭৪টি, বামফ্রন্ট ১৭টি, বিজেপি ৮টি, কংগ্রেস ৩টি ও অন্যান্যরা ৪টি ওয়ার্ড দখল করেছিল।
চন্দননগরে ভাগ্য গণনা হবে ৩২টি ওয়ার্ডের ১১৭ জন প্রার্থীর। এই পুরনিগমে ভোটার ১ লক্ষ ৪৪ হাজার। গতবার এই পুরনিগম ছিল তৃণমূলের দখলে। ২০১৫ সালে চন্দনগরে তৃণমূল পেয়েছিল ২১টি ওয়ার্ড। এছাড়া বামফ্রন্ট ৮টি, বিজেপি ১টি ও অন্যান্যদের দখলে ছিল ৩টি আসন।