শান্তনু চৌধুরী
মন ভালো নেই মনোরঞ্জন মালিকের। মেয়ের খুনের বারো বছর হল। এক যুগ। মেয়ের খুনি শাস্তিও পেয়েছে। কিন্তু এবারের ভোটে সেই খুনির এক আত্মীয়কেই টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। মনোরঞ্জন মালিক, তাপসী মালিকের বাবা। যে তাপসী মালিকের আগুনে পোড়া মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল সিঙ্গুরে, টাটাদের পরিত্যক্ত ন্যানো কারখানার মধ্যে। এবার ভোটে হুগলি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন রথীন মল্লিক। তিনি তাপসী খুনে সাজাপ্রাপ্ত সিপিএম কর্মী দেবু মালিকের আত্মীয়।
‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর অনিচ্ছুক কৃষকরা চাষ করতে শুরু করেছেন, কিন্তু আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমার মেয়ের খুনির আত্মীয়কে ভোটে দাঁড় করানো হবে’’, বলছিলেন তাপসীর বাবা মনোরঞ্জন মালিক।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত নির্বাচন: পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন, এই মর্মে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি সিপিএমের
টিকিট পাননি বলে তাঁর মধ্যে কোনও ক্ষোভ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর ক্ষোভ, তাঁর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। টিএমসি যে কাজ করেছে, তা লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করে মনোরঞ্জনের বক্তব্য, ‘‘পার্টি কী করে ভুলে গেল যে আমার মেয়ে টিএমসি-র কৃষিজমি রক্ষা কমিটির কমিটির সদস্য ছিল? মমতা ব্যানার্জির উপর আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আমার এখনও ওঁর নেতৃত্বের উপর আস্থা আছে।’’ যারা সে সময়ে আন্দোলনের সমর্থক ছিল না, স্থানীয় নেতৃত্ব তাদের সুযোগ সুবিধে দিতে শুরু করেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মনোরঞ্জন।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যও তাঁর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ‘‘যে মুহূর্তে ওরা রথীনকে প্রার্থী করেছে, তখনই আমি নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁডানোর ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলি।’’ হুগলি জেলা পরিষদ আসনে এবার ভোটে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোটঃ তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা বহাল রাখতে সমস্ত বিরোধী দল একজোট
২০০৬-এ খুন হয়েছিলেন তাপসী মালিক। এ ব্যাপারে অভিযোগের তির ছিল সিপিএমের দিকেই। খুনের পর থেকে তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হতে থাকে সিঙ্গুর আন্দোলন।
টিকিট দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে টিএমসি বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, যাদের টিকিট পাওয়া উচিত ছিল তাদেরই টিকিট দেওয়া হয়েছে।