এবার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কাঁথির বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীকে। বুধবারই তৃণমূলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানেই সভাপতি পদ থেকে শিশিরবাবুকে সরানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। আপাতত তাঁকে দলের জেলা সংগঠনে চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়েছে। শিশিরবাবুর বদলে তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতি করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা পিংলার বিধায়ক সৌমেন দাস মহাপাত্রকে।
মঙ্গলবারই শিশির অধিকারীকে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছিল। তারপর দিনই সরনো হল দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে। এই রদবদলের ফলে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে রাজ্যের শাসক শিবিরের দূরত্ব আরও তীব্র হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দলের এই সিদ্ধান্তে অবশ্য কড়া কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি শিশির অধিকারী। জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ট মহলেএ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'আমার কিছউ বলার নেই। দিদিমণি যা নির্দেশ দিয়েছেন মাথা পেতে তা পালন করেছি। এখন সরিয়ে দিলে দেবে।'
উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে অধিকারীদের ‘বিরোধী’ বলেই পরিচিত শাসক শিবিরের নতুন সভাপতি সৌমেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, অধিকারী পরিবারের আপত্তিতেই পাঁচ বছর আগে বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর তমলুকের বদলে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থেকে লড়াই করেছিলেন সৌমেন দাস মহাপাত্র। ফলে বিরোধী শিবির থেকে তৃণমূলের জেলা সংগঠনের মাথায় লোক বসানো আসলে অধিকারীদের ডানা ছাঁটার প্রয়াস তা স্পষ্ট।
সম্প্রতি শিশিরপুত্র শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এরপর তাঁর ভাই সৌমেন্দুও পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেন। সৌমেন্দুকে কাঁথির পুর প্রশাসক পদ থেকে অপসারনের বিরোধিতা করেন অধিকারী পরিবারের আরেক সদস্য তথা তমলুকের সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। এরই মধ্যে তৃণমূল যুব সভাপতির আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে ব্যারাকপুরে শুভেন্দু জানান, তাঁর বাড়িতেও পদ্ম ফুটবে। তাহলে কী দিব্যেন্দু ও শিশিরবাবুও বিজেপিমুখী? জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে।
ছেলেদের দল বদল, দলীয় পদক্ষেপ নিয়ে অবশ্য নীরব ছিলেন শিশির অধিকারী। যা জোড়া-ফুল নেত্রী ভালোভাবে নেননি বলেই খবর। এরপরই ক্রমেই জেলা সংগঠন থেকে অধিকারী ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের সরানোর প্রক্রিয়া চালু হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন