'উন্নয়নের গতিকে রুখে দিতে সক্রিয় একটা অংশ, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে রাজ্যে ষড়যন্ত্র করছে।' টুইটে এমনই অভিযোগ ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের। নাম না করলেও মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় যে তৃণমূল তা স্পষ্ট। বাংলার পর এবার জোড়া-ফুলের নজরে উত্তর পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্য। ত্রিপুরায় জমি পোক্ত করতে মরিয়া তৃণমূল। এই প্রেক্ষাপটে বিপ্লব দেবের এই টুইট তাৎপর্যপূর্ণ। একই সঙ্গে অবশ্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, 'ত্রিপুরার সচেতন নাগরিকগন, ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের এই ভূমিতে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র স্বার্থক হতে দেবেন না।'
কী বলেছেন বিপ্লব দেব?
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত সোমবারই জানিয়েছিলেন যে, বাংলার পর এবার দলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। বিজেপি সরকার উৎখাত করে ২০২৩-এ তৃণমূল ত্রিপুরার শাসনভার দখল করবে। বাংলার উদাহরণ টেনে সেখানকার গণতান্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। জানিয়েছিলেন, বিপ্লব দেবে সরকারকে সরানোর জমি শক্ত করতে বারে বারেই ত্রিপুরায় যাবেন তিনি। সেই মত এই ছোট্ট রাজ্যে সংগঠন বিস্তারের তোড়জোড় শুরু করে ঘাস-ফুল শিবির।
আরও পড়ুন- ‘শাসনের আইন চলছে ত্রিপুরায়’, আগরতলায় পৌঁছেই বিপ্লব সরকারকে নিশানা অভিষেকের
গত শনিবার আমবাসায় তৃণমূলের যুব নেতৃত্বের উপর হামলায় ঘটনায় উত্তপ্ত হয় ত্রিপুরার রাজনীতি। দলীয় কর্মীদের উপর আক্রমণের জন্য বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূল। পরে অবশ্য মহামারি আইনে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের তিন যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত ও সুদীপ রাহা সহ ১৪ জনকে। এর প্রতিবাদে বিপ্লব প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় তৃণমূল।
আরও পড়ুন- ‘দিদি নাটক করেন-ভাই-রা আরও বেশি’, ত্রিপুরাকাণ্ডে কড়া তোপ দিলীপের
গর্জে ওঠেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারাণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রান্ত ও ধৃত দলীয় নেতৃত্বের পাশে দাঁড়াতে রবিবারই খোয়াই পৌঁছে যান অভিষেক। আবারও ত্রিপুরায় বিজেপি শাসনে গণতান্ত্রির কার্যকলাপ নিয়ে সরব হন তিনি। বিপ্লব দেব প্রশানকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেনছেন, 'ত্রিপুরায় আইনের নয়, শাসনের আইন চলছে। গণতন্ত্র বিপন্ন। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব। তৃণমূল বিজেপিকে এক ছটাক জমি ছাড়বে না।' কেন আক্রান্তদের গ্রেফতার করা হল? এই প্রশ্নে খোয়াই থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান অভিষেক। চাপ বাড়ে প্রশাসনের উপর। থানায় ধর্নার হুমকি দেন তিনি। পরে আদালতে থেকে ১৪ ধৃত তৃণমূল কর্মীই জামিনে মুক্ত হন।
আরও পড়ুন- ‘যাঁরা আক্রান্ত তাঁদের কেন গ্রেফতার?’ পুলিশকে প্রশ্ন অভিষেকের, খোয়াই থানায় তুলকালাম
এরপরই একাংশের বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবদেব। টুইটে তিনি লেখেন, "ত্রিপুরার উন্নয়নের গতিকে রুখে দিতে সক্রিয় একটা অংশ, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে রাজ্যে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু ত্রিপুরার সচেতন নাগরিকগণ, ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের এই ভূমিতে কোনও ধরনের ষড়যন্ত্র স্বার্থক হতে দেবেন না"
আরও পড়ুন- দোলা-ব্রাত্যর উপস্থিতিতে ত্রিপুরা কোর্টে জামিন ১৪ টিএমসি নেতার! থানায় ‘অবস্থান’ অভিষেকের
২০২৩-এর বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে এখন থেকে উত্তেজনা বাড়ছে ত্রিপুরায়। অভিষেকের হুঙ্কার, পাল্টা বিপ্লবের কড়া বার্তাতেই তা স্পষ্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন