মমতা-মোদীর গোপন আঁতাঁত চলছে? এমন ইঙ্গিতই করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্না কর্মসূচি পালন করছে জোড়াফুল শিবির। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বাহিনীর ধর্না কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে সোমেন বলেন, ‘‘দিনের বেলায় তৃণমূল ধর্না করে, আর রাতের বেলা মোদীর কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজীব কুমারকে ছাড়িয়ে আনে’’।
ঠিক কী বলেছেন সোমেন?
এ প্রসঙ্গে সোমেন মিত্র এদিন বলেন, ‘‘ওদের (তৃণমূল) সঙ্গে আমাদের ফারাক একটাই। ওরা রাস্তায় নেমে ধর্না করে, আর রাতের অন্ধকারে মোদী সাহেবের কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজীব কুমারকে ছাড়িয়েও আনে। আমরা এটা করি না’’।
সোমেন মিত্র।
আরও পড়ুন: ‘একুশে বাংলায় তৃণমূল সরকার, কারণ ভাই-বোনের লড়াই বাহ্যিক’
প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের। গত সেপ্টেম্বরে রাজীবকে হাতে পেতে রীতিমতো কালঘাম ছোটে সিবিআই-এর। কার্যত বেপাত্তা হয়ে যান এই দুঁদে আইপিএস। রাজীবকে যখন হন্যে হয়ে খুঁজছে সিবিআই, ঠিক সে সময়ই দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন প্রেক্ষাপটকে হাতিয়ার করে আসরে নামে রাজ্যের বিরোধীরা। ‘‘রাজীব কুমারকে বাঁচাতেই মমতা দিল্লি গিয়েছেন’’ বলে সরব হন বিরোধীরা। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যখন মোদী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সে সময় সোমেন মিত্রের রাজীব কুমারকে নিয়ে এহেন মন্তব্য রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘মমতাকে মিসইউজ করেছেন মুকুল রায়’
এদিকে, একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফুরফুরা শরিফের প্রধান ত্বহা সিদ্দিকি বলেছেন, ‘‘কিছুদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গেলেন। একদল মানুষ বলেছিলেন, রাজীব কুমারকে বাঁচাতে যাচ্ছেন। আরেক দল বলেছিলেন, নিজের কোমরের দড়ি খুলতে যাচ্ছেন, ভাইপোর কোমরের দড়ি খুলতে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন একদল মানুষ বলছেন, রাজীবকে বাঁচাতে যাননি, নরেন্দ্র মোদী একের পর এক বিল পাস করাবে, খামোশ খেতে বলেছে’’।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজীব কুমারকে নিয়ে বেনজির পদক্ষেপ করেছে মমতা সরকার। আইপিএস রাজীবকে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিব করা হয়েছে। এডিজি সিআইডি পদে কর্মরত ছিলেন রাজীব। একজন আইপিএসকে কীভাবে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিব করা হল, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।