বিরোধী মহাজোটের শক্তি প্রদর্শন করতে ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ করবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সমাবেশে ডাক দেওয়া হয়েছে দেশের তামাম বিজেপি বিরোধী নেতৃত্বকে। কিন্তু শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বৈঠকে ওই সমাবেশের প্রসঙ্গ ওঠেনি বলেই কংগ্রেস সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, তিনি ব্রিগেডে হাজির থাকবেন কী না, তাও রাহুল জানান নি রাজ্য কংগ্রেসকে। একইসঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে কার সঙ্গে জোট হবে সে বিষয়েও কোনও ইঙ্গিত দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং লোকসভা নির্বাচনে একা লড়ার শক্তি অর্জন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দিল্লির বৈঠকে হাজির ছিলেন এআইসিসির পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ গৌরব গগৈ। এরাজ্যে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সোমেনবাবু জানান, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে রাহুল গান্ধীকে জানানো হয়েছে। 'রথযাত্রা' নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা হচ্ছে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থির করে তোলার অপচেষ্টা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে রাজ্য কংগ্রেস পথে নেমে জনমত গড়ে তুলতে চাইছে, তাও জানানো হয়েছে রাহুলকে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় ফ্রন্টের লক্ষ্যে এবার চার্টার্ড বিমানে উড়বেন চন্দ্রশেখর রাও
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস কার সঙ্গে জোট করবে তা পরিস্কার নয়। স্পষ্ট নয় আদৌ কোনও জোট হবে কী না। যদিও সিপিএম ও কংগ্রেসের একাংশ নিজেদের মধ্যে জোট চাইছে। দলে এখন আর কেউ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে চাইছে না। গত ১২ ডিসেম্বর রাণী রাসমনি রোডের সভায় কংগ্রেস নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও আসন না পেলেও তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যেতে চান না। সোমেনবাবু জানান, নিজের শক্তিতে লড়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে বলে এদিন রাহুল জানিয়ে দিয়েছেন।
রাণী রাসমনি রোডের সভাতেই ব্রিগেডে জনসভা করার কথা বলেছিলেন অনেক বক্তাই। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রাহুল গান্ধীর সময় অনুযায়ী সভা করতে চেয়ে তাঁকে এদিন আমন্ত্রণও জানান সোমেনবাবু। তবে ব্রিগেডে সভা নিয়ে কংগ্রেসের অনেকের মধ্যেই দ্বিধা রয়েছে। কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে ব্রিগেড ভরানোর মত শক্তি এখন দলের আছে কী না ভাবতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্রিগেড না ভরলে বিষয়টা হাস্যকর হয়ে যাবে। তাতে লোকসভার ভোটে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
আবার ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্যের পাল্টা জবাবও দিতে হবে। তা কংগ্রেসের পক্ষে একমাত্র দিতে পারেন রাহুল। তাই সভা হবে, কিন্তু কোথায় হবে তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে প্রদেশ নেতৃত্বের।
রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী জানুয়ারী মাস জুড়ে জেলায় জেলায় জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে আইন অমান্য ও জেল-ভরো আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেই কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে দলের সর্বভারতীয় সভাপতিকে।