পথপ্রদর্শক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় মোদী-শাহ-র কার্পেট প্রচারকে ভোঁতা করে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে তৃণমূল। প্রমাণিত যে প্রতীপশালী হলেও বিজেপিকে হারানো সম্ভব। বাংলায় জোড়া-ফুল শিবিরের জয় গোটা ভারতে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে অক্সিজেন যুগিয়েছে। এবার একযোগে ২০২৪-এর নির্বাচনে ঝাঁপাতে চাইছে বিরোধী শক্তি। তারই সলতে পাকানোর কাজ বিক্ষিপ্তভাবে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের। নয়াদিল্লিতে বিরোধী বেশ কয়েকটি দলও নিজেদের মধ্যে বৈঠক সেরেছে। যা পরবর্তী লোকসভায় বিরোধী জোটের প্রাথমিক আলোচনা বলেই অনুমান। বসে নেই কংগ্রেসও। সোনিয়া গান্ধীও ২০২৪-কে পাখির চোখ করে এখন থেকেই পদক্ষেপ শুরু করতে মরিয়া। সেই সূচনাটা দলের অন্দরে বদলের মাধ্যমেই করতে চাইছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। আসন্ন বাদল অধিবেশনেই কংগ্রেস নেতৃত্বে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে। তৃণমূল সহ বিরোধীদের বার্তা দিতেই সোনিয়ার এই মরিয়া চেষ্টা বলে সূত্রের খবর।
বাংলার ভোটে ধরাশায়ী কংগ্রেস। দলের অন্দরেই বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে জোট নিয়ে যথেষ্ট টানাপোড়েন প্রকট হয়েছিল। তৃণমূল সরকার ও নেত্রীর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। যা নিয়েও দলের ভিতর বিতর্ক ছিল। কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক তালনীতে। যা জাতীয়স্তরেও বিজেপি বিরোধীতায় কংগ্রেস-তৃণমূলকে কাছাকাছি আসায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভায় দলের নেতা হিসাবে অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে দিতে পারেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তৃণমূলের সঙ্গে একযোগে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে মোদী সরকারের নানা বিষয়ের বিরোধীতার পথ সুগম করতেই সোনিয়ার এই কৌশলী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- “উত্তরবঙ্গ ভাগের ট্রেনিং নাকি?” বঙ্গ বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে তোপ তৃণমূলের
রাজ্যপাল ধনকড়ের সঙ্গে প্রথম থেকেই তিক্ত সম্পর্ক তৃণমূল সরকারের। ধনকড়কে পদচ্যূত করতে ইতিমধ্যেই সরব বাংলার শাসক দল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে 'দুর্নীতিপরায়ণ' বলে তোপ দেগেছেন। পাল্টা মমতা সরকারকেও 'স্বৈরাচারী' বলে দেগে দেওয়ার চেষ্টায় জগদীপ ধনকড়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে সরাতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে পারে তৃণমূল। সূত্রের খবর, সংসদীয় অধিবেশন শুরুর আগেই একযোগে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনের জন্য কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলোর কাছে আর্জি জানাতে পারে জোড়া-ফুল শিবির। তার আগেই অধীরকে সরানো হলে তা জাতীয়স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ববাহী হবে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
এখন প্রশ্ন হল যে অধীরের চৌধুরীর বদলে কাকে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা করা হবে? এক্ষেত্রে উঠে আসছে শশী থারুর ও মণীশ তিওয়ারির নাম। উল্লেখ্য, দলের নেতৃত্ব সহ সংগঠনের খোলনলচে পাল্টাতে সোনিয়া গান্ধীকে যে ২৩ জন চিঠি দিয়েছিলেন তার অংশীদার এই দুই নেতাও । হাত শিবিরের অন্দরের খবর, যদি লোকসভার নেতা সহ দলীয় সংগঠেন একাধিক বদল ঘটে তবে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস সভাপতি পদে দায়িত্বগ্রহণের বিষয়টি জোড়ালো হচ্ছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন