বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের সিনিয়র নেত্রী সনিয়া গান্ধী মহিলা সংরক্ষণ বিলকে সমর্থন করেছেন। তিনি যোগ করেছেন যে বিলটি ওবিসি, এসসি এবং এসটিদের জন্য একটি উপসংরক্ষণ সহ অবিলম্বে কার্যকর করা উচিত। কংগ্রেসের তরফে বিলের উপর বিতর্কের সূচনা করে সোনিয়া গান্ধী বলেন, "মহিলা সংরক্ষণ বিল বাস্তবায়নে কোন বিলম্ব ভারতীয় মহিলাদের জন্য একটি চরম অবিচার হবে। সমস্ত বাধা দূর করে মহিলা সংরক্ষণ বিলের অবিলম্বে বাস্তবায়ন শুধু প্রয়োজনীয় নয়, সম্ভবও"। তাঁর বক্তৃতায়, তিনি আরও যোগ করেছেন যে বিলটি প্রথম এনেছিলেন তাঁর স্বামী এবং প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী।
সনিয়া বলেন, "এটি আমার নিজের জীবনেরও একটি আবেগময় মুহূর্ত। প্রথমবারের মত, স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণের জন্য সাংবিধানিক সংশোধনী এনেছিলেন রাজীব গান্ধী। এটি রাজ্যসভায় ৭ ভোটে পরাজিত হয়েছিল। পরে, প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাও-এর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার রাজ্যসভায় এটি পাস করে। ফলস্বরূপ, পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে সারা দেশে আমাদের ১৫ লক্ষ নির্বাচিত মহিলা নেত্রী রয়েছে। সনিয়া বলেন, "রাজীব গান্ধীর স্বপ্ন শুধুমাত্র আংশিকভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার সঙ্গে তাঁর সেই স্বপ্ন পূর্ণ হবে"।
নরেন্দ্র মোদী সরকার মঙ্গলবার ১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল, ২০২৩ পেশ করেছে। যাতে লোকসভা এবং সমস্ত রাজ্য বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে এসসি/এসটিদের জন্য আসনের এক-তৃতীয়াংশ এবং সাধারণ বিভাগে মোট আসনের এক-তৃতীয়াংশ ‘যতটা সম্ভব’ সংরক্ষিত থাকবে। বিলটি পাস হওয়ার পরে পরিচালিত প্রথম আদমশুমারির ভিত্তিতে আসনগুলো সংরক্ষিত হবে। এই আইনে শুরু থেকেই ১৫ বছরের জন্য মহিলাদের আসন সংরক্ষণকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সংসদকে এই সংরক্ষণ আরও বাড়ানোর ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার লোকসভায় নারী সংরক্ষণ বিল পেশ করা হলে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯ সেপ্টেম্বরকে একটি "ঐতিহাসিক দিন" বলে অভিহিত করেন এবং বিরোধী দলগুলিকে বিলটি পাস করার আহ্বান জানান। আজ সকাল ১১ টায় শুরু হয় বিল নিয়ে আলোচনা। আলোচনার শুরুতেই কেন ২০১৭৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এই মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করেনি তাই নিয়ে সরব হন টিএমসি সাংসদ কাকলি ঘোষি দস্তিদার। তিনি বলেন, বিলটি ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য ইতিমধ্যেই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করেছেন। ঠিক এই কারণে দেশের যে কোন রাজ্যের তুলনায় আমাদের রাজ্যে মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা বেশি।"