অনুন্নয়ন নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন অমিত শাহ। সোমবারই তার জবাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার রীতিমত পরিসংখ্যান দিয়ে অমিত শাহের অভিযোগ খণ্ডন করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
রাজ্যে এসে বোলপুরে বাংলার ক্রমহ্রাসমান জিডিপি, শিল্পে অনগ্রসরতা, শিক্ষা-সড়ক নির্মাণের বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দায়ী করেন মমমতা সরকারকে। যা ইতিমধ্যেই 'গারবেজ অফ লাই' বলে নস্যাৎ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সাংসদ সৌগত রায় রাজ্যের শিল্পন্নতি প্রসঙ্গে বিজেপি শাসিত তিন রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, 'গত ১০ বছরে বাংলার জিডিপি ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। শিল্পখাতে উৎপাদনে এই বৃদ্ধির হার ৬০ শতাংশ বেশি। শিল্প বৃদ্ধির হারের নিরিখে দেশের মধ্য়ে বাংলার স্থান পঞ্চম।'
পাট শিল্পের করুণ অবস্থা নিয়েও সরব ছিলেন শাহ। যার জবাবে তৃণমূল সাংসদের দাবি, ' পাট শিল্পে বাংলা এগিয়ে। সব মিল খোলা রয়েছে। এই শিল্পকে আরও চাঙ্গা করতে রাজ্য সরকার ৬০ কোটি পাটের ব্যাগ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাল কেনার জন্য এই পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলক করা হয়ছে।'
পাশাপাশি বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতা সৌগত রায়ের দাবি, 'পরিষেবা ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। রাজ্যে বিদেশি বিনিয়োগ ২৪ গুণ বেড়েছে।' শাহের রাস্তা ও বিদ্যুৎ পরিষেবা সংক্রান্ত কটাক্ষকে উড়িয়ে সৌগতবাবু বলেন, '১১১৮ কিমি গ্রামীণ রাস্তা হয়েছে। ৯০ লক্ষ পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। ১০০ শতাংশ বিদ্যালয়ে বিদ্যুত্ পৌঁছেছে।'
তৃণমূল আমলে বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ভাল হয়েছে বলে জানান সৌগত রায়। তাঁর দাবি, 'স্বাস্থ্যসাথীর সুফল পেয়েছে ১.৪ কোটি পরিবার।হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলা সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। নার্সের সংখ্যা বেড়েছে ৫১ শতাংশ।' এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর সংঘটিত অপরাধ কমেছে বলে জানান তিনি।
ভোটের আগে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মিথ্যা বলে বাংলাকে হেয় করাই বিজেপির লক্ষ্য বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ।
উল্লেখ্য, বাংলার উন্নয়ন নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য সোমবারই অমিত শাহকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘অমিত শাহজিকে বলতে চাই, আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,কিছু যাচাই না করে আপনার দলের কর্মীদের দেওয়া মিথ্য়া তথ্য বলা আপনার শোভা পায় না…বিজেপি একটা চিটিংবাজ দল, সব গারবেজ অফ লাই’। শাহের অভিযোগ প্রসঙ্গে এদিন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী বলেছেন, ‘আজ শুধু দুটো কথা বলব। উনি বলেছেন, শিল্পে আমরা জিরো, আমরা এমএসএমই-তে ১ নম্বর। উনি বলেছেন, আমরা গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করিনি,আমরা এতেও ১ নম্বর। এই তথ্য় ভারত সরকারই শেয়ার করেছে’। এ প্রসঙ্গে আজ, মঙ্গলবার প্রমাণ সহকারে বিশদে জবাব দেবেন বলে গতকালই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন